টিভি স্ক্রিনে হঠাৎ দেখা যায় বিশালাকৃতির একটা সাপ মাঠে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অথচ ক্রিকেটাররা দিব্যি খেলে যাচ্ছেন। সাপটিকে বেশ কয়েকবার দেখানো হলেও খেলা বন্ধ হয়নি। বন্ধ হলেই হয়তো বেঁচে যেতেন মিরাজরা। ২৬ বলের মধ্যে ৫ রানের ব্যবধানে ৭ উইকেট হারানোর লজ্জার হাত থেকে বেঁচে যেতেন। কলম্বোর রানা প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে গতকাল বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা মুখোমুখি হয়েছিল তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে। স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকে ২৪৪ রানে বেঁধেও চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে হেরে যায় ৭৭ রানের বড় ব্যবধানে। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ও কামিন্দু মেন্ডিসের স্পিনের মায়াজালে বাংলাদেশ ৩৫.৫ ওভারে ১৬৭ রানে গুটিয়ে যায়। সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে ৫ জুলাই শনিবার। লঙ্কান স্পিন ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড ব্যাটিংয়ের ব্যাখ্যায় টাইগার অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ বলেন, ‘প্রেমাদাসার উইকেট ভালো ছিল। পেসাররা শুরুতে উইকেট নিলেও মাঝামাঝি উইকেট নিতে পারিনি। এজন্য চারিথ আশালাঙ্কা কৃতিত্ব পাবেন। প্রচ গরমে মুস্তাফিজুর রহমান ও তানভির ইসলামের ক্র্যাম্প হয়েছে। ম্যাচের প্রথম ৮০ ওভার আমরা দারুণ খেলেছি। তানজিদ ও নাজমুল ভালো ব্যাটিং করেন। কিন্তু মিডল অর্ডারে টানা উইকেটের পতনে আমরা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ি।’
৫ রানে ৭ উইকেট (দ্বিতীয় থেকে অষ্টম উইকেট) হারানোর রেকর্ড ক্রিকেট বিশ্বে আর নেই। আগের রেকর্ডটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। ২০২০ সালে নেপালের বিপক্ষে ২৩-৩১ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারিয়ে রেকর্ডটি গড়েছিল মার্কিন ক্রিকেট দল। মিরাজ বাহিনী সেই রেকর্ডটি গড়ে গতকাল। ১ উইকেটে ১০০ থেকে ১০৫ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারিয়ে পুরোপুরি ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে। উইকেটগুলোর পতন হয় ১৬.৩ ওভার থেকে ২০.৫ ওভারের মধ্যে। রানের ব্যবধান ৫ ও বলের পার্থক্য ২৬। মিরাজ বাহিনীর এ ব্যাটিং বিপর্যয়ের কারিগর লঙ্কান দুই স্পিনার হাসারাঙ্গা ও মেন্ডিস। এ ব্যাটিং বিপর্যয়ে সাজঘরে ফেরেন তানজিদ তামিম (৬২), নাজমুল (২৩), লিটন দাস (০), তাওহিদ হৃদয় (১), অধিনায়ক মিরাজ (০)। চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে টাইগাররা যখন লজ্জাজনক অলআউটের পথে হাঁটছিলেন, তখন প্রত্যয়ী ব্যাটিং করেন জাকের আলি অনীক। ৬৪ বলে ৪টি করে চার ও ছক্কায় ৫১ রান করে দলকে একটি সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে যান। এর আগে শ্রীলঙ্কা অলআউট হয় ২৪৪ রানে। দলটির অধিনায়ক আশালাঙ্কা ১০৬ রান করেন ১২৩ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায়। টাইগারদের পক্ষে সেরা বোলিং করেন ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফেরা তাসকিন আহমেদ। তাঁর বোলিং স্পেল ১০-২-৪৭-৪। ভালো বোলিং করেছেন তানজিম সাকিবও। তাঁর স্পেল ৯.২-০-৪৫-৩। নতুন যুগের সূচনার ম্যাচে অধিনায়ক মিরাজ উইকেট পাননি। টানা পাঁচ ম্যাচে উইকেটশূন্য রইলেন টাইগার অধিনায়ক।