ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। ইউরোপিয়ান অনেকেই এ টুর্নামেন্ট আর দেখতে চান না। স্প্যানিশ ফুটবলপ্রধান হাবিয়ের টেবাস খোলাখুলিই এমনটা বলেছেন। তাঁর মতে ফিফা কেবল অর্থোপার্জনের আরও একটা টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে চায়। তবে তেবাসের সঙ্গে দ্বিমত করার লোকও কম নন। ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ ধীরে ধীরে জমে উঠছে। বড় বড় দলকেও কঠিন পরীক্ষায় ফেলে দিচ্ছে আন্ডারডগরা। বুধবার গভীর রাতে যেমনটা হলো। রিয়াল মাদ্রিদ আরব ক্লাব আল হিলাল বাধা অতিক্রম করতে পারল না। সৌদি আরব ফুটবলে বড় বাজেট নিয়ে নামে বেশ কয়েক বছর আগে। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, করিম বেনজেমা, সাদিও মানেদের মতো বড় বড় তারকা এ লিগে যোগ দেন। সেই থেকে মানুষের আগ্রহ দিনে দিনে বাড়তেই থাকে। তবে ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলোর তুলনায় তাদের অবস্থান ছিল অনেক নিচে। সে অবস্থানেরই পরিবর্তন করল আল হিলাল!
বুধবার রাতে (বাংলাদেশ সময়) ফ্লোরিডার মায়ামি শহরে ফুটবলপ্রেমীর ভিড় লেগে যায়। রিয়াল মাদ্রিদের খেলা দেখতে দলে দলে ছুটে আসে তারা হার্ড রক স্টেডিয়ামে। প্রায় ৬৩ হাজার দর্শক গ্যালারিতে বসে খেলা দেখেন। ধারণক্ষমতার চেয়ে মাত্র ২ হাজার কম ছিল দর্শক উপস্থিতি। ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে এমন দর্শকসমাগম মাত্র হাতেগোনা কয়েকটি ম্যাচেই দেখা গেছে। অবশ্য দর্শক কিছুটা হতাশই হয়েছেন। বিশেষ করে কিলিয়ান এমবাপ্পেকে সাইডলাইনে দেখে। এমনকি দলেই ছিলেন না এ ফরাসি তারকা। রিয়ালের কোচ জাভি আলোনসো অবশ্য এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন। ফ্রান্সের জার্সিতে কিছুদিন আগেই উয়েফা নেশন্স লিগ খেলে এসেছেন এমবাপ্পে। এ কারণে তাকে কিছুদিন বিশ্রাম দিয়েছেন কোচ। এমবাপ্পেকে ছাড়া জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি রিয়াল মাদ্রিদ। আল হিলালের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে। ম্যাচের ৩৪ মিনিটে গনজারো গার্সিয়ার গোলে এগিয়ে গিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। ৪১ মিনিটে রুবেন নেভেসের গোলে সমতায় ফেরে আল হিলাল। সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলালেও তারকা কম নয়। সেনেগালের কালিদু কুলিবেলি এবং পর্তুগালের হুয়াও ক্যানসেলো ও রুবেন নেভেস দলটাকে বেশ শক্তিশালী করেছেন। তারই প্রমাণ মিলল বুধবার। রিয়াল মাদ্রিদের ভিনিসাস জুনিয়র, রদ্রিগো, জুড বেলিংহ্যামদের আক্রমণগুলো বারবারই বাধা পেয়েছে আল হিলালের ডিফেন্স লাইনে। অবশ্য আল হিলালের নায়ক ইয়াসিন বোনো। মরক্কোর এই গোলরক্ষক যোগ করা সময়ে ফেডেরিকো ভালভার্দের পেনাল্টি রুখে দেন। এ ছাড়া দলগত পারফরম্যান্সেও আল হিলাল ছিল সমানে সমান। রিয়ালের ১৯ আক্রমণের বিপরীতে আল হিলালের আক্রমণ ছিল ১৩টি। পাসের সংখ্যা, বল দখল কিংবা সঠিক পাসের দিক দিয়েও রিয়ালের কাছাকাছি ছিল সৌদি আরবের ক্লাব। রিয়াল মাদ্রিদকে রুখে দিয়ে বড় একটা প্রশ্ন তুলে দিয়েছে আল হিলাল। এশিয়ান ক্লাব ফুটবল কি তবে ইউরোপিয়ানদের সঙ্গে ব্যবধান কমিয়ে আনছে!