প্রথমবারের মতো মানব ভ্রূণ জরায়ুতে প্রতিস্থাপনের পুরো প্রক্রিয়া ৩-ডি ভিডিওতে ধারণ করেছেন বিজ্ঞানীরা। স্পেনের ইনস্টিটিউট ফর বায়োইঞ্জিনিয়ারিং অব কাতালোনিয়া এ গবেষণা সম্পন্ন হয়। বার্সেলোনার ডেক্সেউস ইউনিভার্সিটি হাসপাতাল গবেষণার জন্য কৃত্রিম ভ্রূণ সরবরাহ করে।
গবেষকরা জানান, ভ্রূণ প্রতিস্থাপন হলো গর্ভধারণের সূচনাকারী ধাপ। যখন নিষিক্ত ডিম্বাণু জরায়ুর ভেতরের স্তরে আটকে যায় এবং কোষ বিভাজনের মাধ্যমে বৃদ্ধি শুরু করে, তখনই প্রকৃত গর্ভধারণ শুরু হয়। সাধারণত ডিম্বস্ফোটনের ৬ থেকে ১২ দিনের মধ্যে এ প্রক্রিয়া ঘটে। তবে এতদিন পর্যন্ত এটি সরাসরি দেখা সম্ভব হয়নি।
প্রধান গবেষক স্যামুয়েল ওহোসনেগ্রোস বলেন, আমরা দেখেছি ভ্রূণ জরায়ুর ভেতরে ঢুকতে গিয়ে যথেষ্ট চাপ প্রয়োগ করে। এটি একটি আক্রমণাত্মক প্রক্রিয়া বলা যায়। এ সময় অনেক নারী হালকা ব্যথা বা সামান্য রক্তপাত অনুভব করেন, যা এর স্বাভাবিক লক্ষণ।
গবেষকরা আরও জানান, ভ্রূণ প্রতিস্থাপন ব্যর্থ হলে গর্ভধারণ সম্ভব হয় না। এটি বন্ধ্যাত্বের অন্যতম প্রধান কারণ এবং প্রায় ৬০ শতাংশ গর্ভপাতের পেছনে এই কারণ দায়ী।
গবেষণায় দেখা যায়, ভ্রূণ প্রতিস্থাপনের সময় জরায়ুর অভ্যন্তরীণ আস্তরণকে টেনে ও নতুন আকারে সাজাতে থাকে। একইসঙ্গে জরায়ুর ভেতরের প্রাকৃতিক সংকোচন ভ্রূণ প্রতিস্থাপনে ভূমিকা রাখে। সাধারণত মাসিক চক্রে প্রতি মিনিটে এক থেকে দুইবার এ ধরনের সংকোচন ঘটে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই সংকোচনের ধরন ও হার ভ্রূণ প্রতিস্থাপনের সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এ গবেষণা ভবিষ্যতে চিকিৎসার সাফল্যের হার বাড়াতে বড় ভূমিকা রাখবে। এর মাধ্যমে বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল