আমার আর কেতকীর মধ্যে ভালো করে আলাপ হওয়ার আগেই দূর থেকে আমরা পরস্পরের দিকে তাকিয়ে হাসতাম। তার হাসির সঙ্গে আমার হাসির এক অদ্ভুত বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল। আমার বাড়ির সামনে নিম ও শিশুগাছে ঘেরা এক বড় পুকুর। তার ওপারে সরষে আর ছোলার খেত। এই খেতের বাঁ-দিকে একটা সরকারি কলেজের বিশাল বাগান। সেই বাগানের এক কোণে কেতকীর কুঁড়েঘর। বাগানে জল দেওয়ার জন্য সরু লম্বা লম্বা নালা কাটা আছে। এরকম একটা নালার ধারে বসে থাকা কেতকীকে আমি রোজ দেখতাম। কোনো দিন থালা কি হাঁড়ি মাজছে, কখনো আঁজলা ভরে জল তুলে তুলে মোটা মোটা রুপোর বালা পরা হাত ধুচ্ছে। সে সময় তার শরীরেও সেই মোটা মোটা রুপোর কড়ার মতো মাংসের গোল গোল দাগ কেটে দিয়েছে। কিন্তু তার শ্যামল চেহারাটি এমন স্নিগ্ধ সুন্দর যে, এই শিথিলতাটুকুই যেন তাকে এক বাড়তি সৌন্দর্য এনে দিত। আশপাশের প্রতিবেশীর মধ্যে প্রসন্নতার বড় অভাব সত্ত্বেও দূর থেকে ওর শিথিল মুখের হাসিতে চোখের কোলে সেই গভীর প্রসন্নতার সৌন্দর্য দেখা দিত। এক অদ্ভুত শান্ত সৌন্দর্য। আমি অবাক হয়ে ভাবতাম কোন মায়ামন্ত্রে ও নিজের ওই শ্যামল মোটাসোটা চেহারার চোখে, ঠোঁটে, এই প্রসন্নতা ধরে রেখেছে। ওকে দেখলেই আমি হেসে ফেলতাম। আমাকে দেখলেই ও হাসত। এমনি করেই আমার কাছে বাগানের আরও অনেক ফুলের মাঝে ও একটা ফুল হয়ে উঠেছিল। অন্য অনেক ফুলের আমি নাম জানি না কিন্তু ওর একটা নাম আমি মনে মনে দিয়েছিলাম ‘রক্তমাংসের ফুল’।
একবার পুরো তিন দিন আমি ওর বাগানে যেতে পারিনি। চতুর্থ দিন যখন গেলাম। তখন ও এমন দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকাল যে মনে হলো যেন তিন দিন নয় তিন বছরের অদর্শনের পর ও আমাকে দেখছে।
-কী হয়েছিল মা তোমার? এত দিন আসনি কেন।
-খুব শীত লাগছিল আম্মা। বিছানায় বসে বসেই কাটিয়েছি।
-সত্যি বাপু, বড্ড ঠান্ডা পড়ে তোমাদের দেশে।
-তোমার দেশ কোথায় আম্মা? কোন গ্রামে?
-এখন তো এখানেই থাকি, এখানেই মাথা গুঁজেছি- এখানেই আমার দেশ।
-তা ঠিক, তবু নিজের গ্রাম...।
-সেই দেশ সেই গাঁয়ের সঙ্গে সম্বন্ধ তো ভেঙে গিয়েছে মা। এখন এই কার্তিক-ই আমার গাঁয়ের মাটি বলো, আকাশ বলো, সব। এই ‘কার্তিক’ বলতে, বৃদ্ধা হাত দেখিয়ে ঝুপড়ির পাশে বসে থাকা বৃদ্ধটিকে দেখিয়ে বললো। বয়সের ভারে ন্যুব্জ দেহে মানুষটি মাটিতে বসে বাঁশের চটা আর দড়ি দিয়ে ঢিলে চাটাই বুনছে, দূরের কতগুলো ফুলগাছের টবকে শীতের হাওয়া থেকে আড়াল দেওয়ার জন্য। কেতকী খুব ছোট বাক্যটিতে অনেক বড় একটা কথা বলে ফেলেছে। হয়তো এরকমই হয়। গভীর সত্যকে প্রকাশ করার জন্য কোনো বাহুল্যের দরকার হয় না। আমি অবাক হয়ে সেই লোকটির দিকে তাকিয়ে রইলাম, যে একই সঙ্গে একটি নারীর ভূমি ও আকাশ হয়ে উঠতে পেরেছে।
-কী দেখছ মা? এ তো আমার বেয়ারিং চিঠি।
-বেয়ারিং চিঠি?
-যে চিঠিতে টিকিট লাগানো থাকে না, সেটা বেয়ারিং হয়ে যায় না?
-হ্যাঁ আম্মা, চিঠিতে টিকিট লাগানো না থাকলে বেয়ারিং হয়ে যায়।
-তখন যে নেয় তাকে দিগুণ দাম দিতে হয়।
-হ্যাঁ আম্মা, তার জন্য দিগুণ দাম তো দিতেই হয়।
-ব্যাস, আমাকেও মনে কর তাই। এর জন্য দিগুণ দাম দিয়েছি। এক শরীরের আর এক মনের।
আমি কেতকীর মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম। তার সাধারণ গ্রাম্য চেহারার মধ্যে জীবনের অনেক বড়, অনেক গভীর কোনো সত্যের ছায়া ফুটে উঠেছিল।
-এই সম্পর্কে চিঠি যখন লেখে, গাঁয়ের মাথারা পাঁচজনে তার ওপর নিজেদের সিলমোহর দিয়ে দেয়।
-তোমাদের সম্পর্ক গাঁয়ের পাঁচজনে মেনে নেয়নি?
-নেয়নি তো কী হয়েছে, আমার চিঠি আমি নিয়ে নিয়েছি। এই কার্তিকের চিঠিটার ওপর কেবল কেতকীর নামই লেখা ছিল।
-তোমার নাম কেতকী বুঝি? কী সুন্দর নাম! তুমি তো খুব বাহাদুর মেয়ে।
-আমি বাঘের জাতের মেয়ে।
-সে কোন জাত আম্মা?
-ওই যে জঙ্গলে বাঘ থাকে না, তারা সব আমাদের জাতেরই ভাই-বন্ধু হয়। এখনো জঙ্গলে কোনো বাঘ মরলে আমাদের তেরো দিন শোক হয়। আমাদের পুরুষরা মাথা ন্যাড়া করে আর হাঁড়ি ভাঙে। তারপর যে মরেছে তার নাম করে চাল-ডাল বিলোয়।
-সত্যি আম্মা?
-আমি চকমটি টোলার মেয়ে, ওই যার নিচ দিয়ে কপিলধারা বয়ে যায়।
-কপিলধারাটা কী আম্মা?
-তুমি গঙ্গার নাম জান তো?
-গঙ্গা নদী?
-গঙ্গা খুব পবিত্র নদী।
-জানি।
-কিন্তু কপিলধারা গঙ্গার চেয়েও পবিত্র। লোকে বলে গঙ্গা নাকি বছরে একবার কালো গাইগরুর রূপ ধরে কপিলধারায় স্নান করতে আসে।
-এই চকমটি টোলাটা কোথায় আম্মা?
-করঞ্জিয়ার কাছে।
-করঞ্জিয়া সেটা কোথায়?
-নর্মদা নদীর নাম জান?
-হ্যাঁ।
-নর্মদা আর শোন নদীও ওই কাছাকাছি।
এই নদীগুলোও তো খুব পবিত্র।
-তা ঠিক- তবে কপিলধারার মতো নয়। অনেক দিন আগে একবার ভারি খরা হয়েছিল। পৃথিবীর কোনো খেতে আর এক ফোঁটাও জল ছিল না। মানুষের কষ্ট দেখে স্বয়ং বিধাতাপুরুষ-ই কেঁদে ফেলেছিলেন। তার সেই চোখের দুফোঁটা জল থেকে নর্মদা আর শোন নদী তৈরি হলো। সেই থেকে এই দুই নদী মানুষের খেতে খামারে জল দেয়।
-আর কপিলধারা।
-কপিলধারা তো মা মানুষের আত্মাকে ধুয়ে দেয়। আমি সেই কপিলধারায় স্নান করে কার্তিককে নিজের স্বামী বলে মেনে নিলাম।
-তখন তোমার বয়স কত ছিল আম্মা?
-কত আর হবে, হয়তো যোল বছর।
-কিন্তু তোমার মা-বাবা কার্তিকের সঙ্গে তোমার বিয়ে দিল না কেন?
-হলো কী, কার্তিকের আগে একবার বিয়ে হয়েছিল। আমার সাথী ছিল সে। বড় ভালো মেয়ে ছিল। বেচারির যমজ ছেলে হলো চন্দর আর মন্দর। কিন্তু গ্রামের এক গণক বলতে লাগল, এ মেয়ে নষ্ট। এ একই দিনে নিজের স্বামীর সঙ্গেও করেছে আবার কোনো ভাবের লোকের সঙ্গেও শুয়েছে। এই জন্য দুটো ছেলে হয়েছে।
-এত বড় দোষ দিল শুধু এই কারণে!
-গণকের কথার সঙ্গে তো তর্ক চলে না। মুখিয়া বলল, রুপোকে প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে। তার নাম ছিল রুপি। বেচারি তো কেঁদে কেঁদে আধমরা হয়ে গেল।
-তারপর?
-তার কতদিন পরে রুপির একটা ছেলে মরে গেল। গণক বলল, ওটা পাপের ছেলে ছিল তাই মরেছে।
-তারপর?
-একদিন রুপি গাছের ডালে ছেলের দোলনা বেঁধে রেখে জঙ্গলের কিনারে মহুয়ার ফুল কুড়োচ্ছে, এর মধ্যে পাশের ঝোপ থেকে একটা হরিণ বেরিয়ে এসেছে। সেটার পেছনে শিকারি কুকুর তাড়া করেছিল। হরিণটা তো প্রাণের ভয়ে ছুটেছে, ছুটে পালিয়েছে, কিন্তু সেই শিকারি কুকুর সামনে বাচ্চাটাকে পেয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাচ্চাটাকে কামড়ে ছিঁড়ে শেষ করেছে।
-আহারে বেচারি রুপি।
-তখন গণক বলতে লাগল, যেটা পাপের ছেলে ছিল তার আত্মাটা হরিণরূপ ধরে ভালো বাচ্চাটাকে মেরে ফেলল।
-তা কেন? হরিণ তো বাচ্চাকে মারেনি, মেরেছে তো কুকুরে।
-গণকের কথা মা। কারও বোঝার সাধ্য নেই। বলতে লাগল, পাপের আত্মাটা বাচ্চার থেকে বেরিয়ে হরিণের শরীরে ঢুকেছে বলেই কুকুর অমনি বিনা কারণে বাচ্চাটাকে মেরে ফেলেছে। গণক তো কথায় কথায় লোককে মারিয়েও ফেলে। গসাই গাঁয়ের নন্দা যখন শিকার করতে গেল। তো কোনো হরিণের গায়ে তীর লাগল না। গণক বলল, ও যখন শিকারে ছিল, ওর বউ নিশ্চয়ই কোনো পরপুরুষের সঙ্গে শুয়েছিল, তাই তো ওর তীরের জোর নষ্ট হয়ে গেছে। এই না শুনে নন্দা সটান বাড়ি এসে সেই তীর দিয়ে বউটাকে মেরে ফেলল।
-সে কী!
-গণক কার্তিককে বলল, যেন সে নিজের বউকে মেরে ফেলে। না হলে, ওর পাপের আত্মা বউটার পেট থেকে আবার জন্মাবে আর তার মুখ দেখলে গাঁয়ের খুব অমঙ্গল হবে।
-তারপর!
-কার্তিক নিজের বউকে মারতে রাজি হলো না। তাতে গণক রেগে গেল, গাঁয়ের লোকও রেগে গেল।
-গাঁয়ের লোক রেগে গেলে কী হবে?
-গাঁয়ের লোক জানতো গণকের খুব রাগ। মনে করে, গণক রেগে গেলে বাণ মেরে গাঁয়ের সব জীব-জানোয়ার মেরে ফেলতে পারে, আরও কত কিছু করতে পারে। ওসবের জন্য গাঁয়ের সবাই একাট্টা হয়ে কার্তিককে একঘরে করে দিল।
-ওরা ভেবে দেখল না, গণকের কথায় বউকে মেরে ফেললে তারপর নিজের প্রাণ বাঁচবে কী করে?
-কেন? প্রাণের আবার কী হবে?
-মানুষ খুন করলে পুলিশে ধরে না।
-না, না, ওসব শহরে হয়। গাঁয়ের লোক নালিশ করলে, সাক্ষী দিলে তবে না পুলিশ এসে ধরে। গাঁয়ের লোক যদি কাউকে মারবে বলে ঠিক করে পুলিশ জানতেও পারে না।
-তারপর কী হলো?
-নানা কষ্টে মনের দুঃখে রুপি বেচারি একদিন মহুয়া গাছে গলায় দড়ি দিল।
-বেচারি নির্দোষ মেয়েটা।
-গাঁয়ের লোক ধরে নিল লেঠা চুকে গেছে। কেবল আমি জানতাম, ব্যাপারটা মেটেনি। আমি জানতাম, কার্তিক মনে মনে ঠিক করেছে ও গণককে খুন করবে। ওঝা বা গণকরা মরলে কী না রাক্ষস হয়।
-এই লোকটা তো বেঁচে থাকতেই রাক্ষস ছিল।
-জানো রাক্ষস কাকে বলে?
-কাকে?
-যে লোক বেঁচে থাকতে কাউকে ভালোবাসে না, অন্য লোককে দুঃখ দেয়, তারা মরলে আত্মা কালো হয়ে যায়। তার বুক থেকে আগুন বেরোয়। আর তারা গাঁয়ে ঘরে সোমত্ত মেয়েদের ভয় দেখিয়ে বেড়ায়।
-তারপর কী হলো?
-গণক মরলে আমার দুঃখ ছিল না। কিন্তু আমি তো জানি কার্তিক যদি গণককে মারে তা হলে গাঁয়ের লোকেরা তক্ষুনি ওকে তীর বিঁধিয়ে মারবে।
-তাহলে?
-আমি কপিলধারার জলে দাঁড়িয়ে ভগবানকে সাক্ষী রেখে ওকে কথা দিলাম, আমি ওর বউ হব। আমরা দুজনে পালিয়ে যাব দূরে। নইলে এই দেশে থাকলে কার্তিক গণককে খুন করবে আর গাঁয়ের লোক ওকে মেরে ফেলবে।
-তো কার্তিককে বাঁচানোর জন্য তুমি দেশ ছেড়ে দিলে?
-জানি, যে দেশে মহুয়া জন্মায় না, সে দেশ নরকের সমান। তবু কী করব! যদি গাঁ না ছাড়তাম তা হলে তো কার্তিককে বাঁচাতে পারতাম না। আর কার্তিক না থাকলে ওই দেশও তো আমার কাছে নরক হয়ে যেত। ওকে নিয়ে কত জায়গায় ঘুরলাম। তারপর রুপি ফিরে এলো।
-রুপি কেমন করে ফিরল? আমি আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করলাম।
-আমাদের যে মেয়ে হলো, তার নাম রাখলাম রুপি। কপিলধারায় দাঁড়িয়ে আমি এও শপথ নিয়েছিলাম, যদি কখনো আমার মেয়ে হয় তো নাম রাখব রুপি। আমি তো জানতাম, রুপির কোনো দোষ ছিল না। মেয়ের নাম রুপি রাখাতে কার্তিক খুব খুশি হয়েছিল।
-এখন তো তোমার রুপিও বড় হয়ে গিয়েছে।
-আরে মা-এখন তো রুপির ছেলেরাও বড় হতে চলল। বড়টা আট বছরের, ছোটটা ছ বছরের। রুপি তো এই বাগানে মালির বউ হয়েছে। ওর দুই ছেলের নাম চন্দর, মন্দর।
-ওই রুপির ছেলেদের যে নাম ছিল?
-হ্যাঁ, সেই নামই রেখেছি। আমি জানি, ওরা কেউ পাপের ছেলে নয়।
অমৃতা প্রীতম
অমৃতা প্রীতম। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, আত্মজীবনী সব শাখাতেই স্বকীয়তা বজায় রেখেছেন। ব্রিটিশ ভারতের অবিভক্ত পাঞ্জাবের গুজরানওয়ালার এক মধ্যবিত্ত পরিবারে ১৯১৯ সালে জন্ম নেন তিনি। মাত্র ১১ বছর বয়সে মাকে হারান। এরপর বাবার সঙ্গে লাহোরে চলে যান। তাঁর প্রকৃত নাম ছিল অমৃতা কৌর। ১৬ বছর বয়সে বিয়ে হয় প্রীতম সিং নামের এক সম্পাদকের সঙ্গে। তাঁর নামে যোগ হয় ‘প্রীতম’। ১৯৩৬ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ অমৃত তরঙ্গ। সাহিত্যজগতে প্রবেশের পাশাপাশি তিনি জড়িয়ে পড়েন প্রগতিশীল লেখক আন্দোলন এবং নানা সমাজকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে। ১৯৪৪ সালে প্রকাশিত ‘গণরোষ’ কাব্যগ্রন্থে ফুটে ওঠে দুর্ভিক্ষ, যুদ্ধ ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় বিপর্যস্ত মানুষের বেদনার ছবি। দেশভাগের পর ১৯৪৭ সালে অমৃতা লাহোর ছেড়ে চলে যান ভারতে। ১৯৫০ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস পিঞ্জর। ২০০৩ সালে এই উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হয় বলিউড চলচ্চিত্র পিঞ্জর, যা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করে। ১৯৫৬ সালে তিনি প্রথম নারী হিসেবে লাভ করেন ‘সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার’। পরবর্তীতে পেয়েছেন ‘জ্ঞানপীঠ পুরস্কার’, ‘পদ্মশ্রী’ ও ‘পদ্মবিভূষণ’। ২০০৫ সালের ৩১ অক্টোবর, ৮৬ বছর বয়সে ঘুমের মধ্যেই মারা যান এই সাহিত্যিক কিংবদন্তি।