সমালোচনা এবং তীব্র প্রতিবাদের মুখে ইলন মাস্ক হোয়াইট হাউজ ত্যাগ করার পরও থেমে যাননি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিষয়টি দৃশ্যমান হলো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক হাজার ১০৭ জন সিভিল সার্ভিস কর্মী এবং ২৪৬ জন ফরেন সার্ভিস কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে ছাঁটাই করার মধ্য দিয়ে। কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীদের গণছাঁটাই ও দপ্তর ঢেলে সাজানোর ট্রাম্প প্রশাসনের বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, সরকারি দপ্তরগুলো ঢেলে সাজানোর বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে চলতি বছরের শুরুতে পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রায় ১ হাজার ৫০০ কর্মী স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। এই ব্যাপক ছাঁটাই যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক কার্যক্রম ও মানবিক সহায়তা কর্মসূচিগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এই ছাঁটাইয়ের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে শরণার্থী পুনর্বাসন সংক্রান্ত ‘ব্যুরো অব পপুলেশন রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেশন’ অধীন ‘অফিস অব অ্যাডমিশন’। এই বিভাগ যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয়প্রার্থীদের পুনর্বাসন নিয়ে কাজ করে।
যুক্তরাষ্ট্রে আফগান নাগরিকদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে গঠিত ‘কো-অর্ডিনেটর ফর আফগান রিলোকেশন এফোর্টস (কেয়ার)’-এর অনেক কর্মী ছাঁটাই তালিকায় রয়েছেন।
ছাঁটাইয়ের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, অনেক কর্মী পররাষ্ট্র দপ্তরের লবিতে বিদায়ী সহকর্মীদের আলিঙ্গন করছেন। কেউ কেউ চোখ মুছছেন, আবার অনেকে নিজের জিনিসপত্র নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে, ভবনের বাইরেও অনেক বিক্ষোভকারীরা প্ল্যাকার্ড হাতে জড়ো হন। তাতে লেখা- ‘থ্যাংক ইউ টু আমেরিকা’স ডিপ্লোম্যাটস’ এবং ‘উই অল ডিজার্ভ বেটার’।
অন্যদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ায় বলেন, কর্মী ছাঁটাই এখানে মুখ্য নয়। যখন কোনো দপ্তর বন্ধ হয়ে যায়, তখন সেই দপ্তরের পদগুলোরও আর প্রয়োজন থাকে না। এটা আসলে পদের অবলুপ্তি ঘটেছে, মানুষের নয়।
তবে ডেমোক্র্যাটরা এক বিবৃতিতে এই পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছেন। তারা বলছেন, সিভিল সার্ভিস ও ফরেন সার্ভিসের শত শত কর্মীকে ছাঁটাই করার সিদ্ধান্ত আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
দ্বিতীয় বারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরই প্রশাসনিক ব্যয় সংকোচের কথা বলেন ট্রাম্প। তারপর একাধিক দপ্তর থেকে বহু কর্মী ছাঁটাই হয়েছে। তবে অধস্তন আদালতের এক রায়ে গণছাঁটাই প্রক্রিয়া কিছুদিনের জন্য থমকে ছিল।
গত ৯ জুলাইয়ে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, এ বিষয়ে আপাতত এগোতে পারবে ট্রাম্প প্রশাসন। তারপরই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে গণছাঁটাইয়ের এই ঘটনা ঘটলো। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিকে তার ‘আমেরিকা সর্বাগ্রে’ কর্মসূচির ছাঁচে ঢেলে সাজানো নিশ্চিত করার যে চেষ্টা নিয়েছেন, তারই প্রথম ধাপ হিসেবে পররাষ্ট্র দপ্তরের এই কর্মী ছাঁটাইয়ের পদক্ষেপ।
বিডি প্রতিদিন/এমআই