মাইলস্টোন স্কুলে বিমান দুর্ঘটনায় দগ্ধদের রাজধানীর জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে (এনআইবিপিএস) তিন দিন ধরে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে যুক্তরাজ্যের একটি বিশেষায়িত জরুরি চিকিৎসক দল (ইউকে ইএমটি)।
এনআইবিপিএস-এর আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান আজ সোমবার বলেন, ‘নয় সদস্যের ব্রিটিশ মেডিকেল টিমটি গত তিনদিন ধরে দগ্ধদের চিকিৎসার সঠিক পদ্ধতি নির্ধারণের জন্য অনুষ্ঠিত প্রতিটি মেডিকেল বোর্ড সভায় অংশগ্রহণ করেছে।’
তিনি জানান, ব্রিটিশ মেডিকেল টিমের সদস্যরা প্রতিদিন দগ্ধদের পরিদর্শন করেন। চিকিৎসাধীন দগ্ধ এসব রোগীকে বর্তমানে যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
নয় সদস্যের এ মেডিকেল টিমে সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ, নিবিড় পরিচর্যা চিকিৎসক, সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ নার্স এবং পুনর্বাসন বিশেষজ্ঞ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এরা সকলেই অত্যন্ত অভিজ্ঞ এবং ক্লিনিক্যাল পেশাদার।
আগামী তিন সপ্তাহ তারা স্থানীয় চিকিৎসকদের সাথে কাজ করে এনআইবিপিএস-এ চিকিৎসাধীন আহত শিক্ষার্থীদের জরুরি সেবা এবং পুনর্বাসন পরিষেবা প্রদান করবেন।
গত রবিবার রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুলে বিমান বিধ্বস্তে দগ্ধ আরও দুইজন রোগীকে এনআইবিপিএস থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ডা. শাওন বলেন, ‘দুর্ঘটনায় দগ্ধ ২৪ জন রোগী এখন বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন আছেন। এদের মধ্যে দুইজন রোগীর অবস্থা এখনও সংকটজনক এবং তারা নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রয়েছেন এবং তাদের মধ্যে একজন লাইফ সাপোর্টে আছেন ।’
তিনি আরও বলেন, গত রোববার ছাড়পত্র পাওয়া দুইজন রোগীসহ ইতিমধ্যে ১৪ জন দগ্ধ রোগীকে ইনস্টিটিউট থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
ডা. শাওন আরও বলেন, বার্ন ইনস্টিটিউটে বর্তমানে চিকিৎসাধীন ২৪ জন রোগীর মধ্যে ১৫ জন মেয়ে এবং ৮ জন ছেলেসহ ২২ জন শিশু এবং দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী রয়েছেন। তাদের মধ্যে সাতজন ইনহেলেশন ইনজুরিতে আক্রান্ত এবং পাঁচজনের ৩০ শতাংশেরও বেশি দগ্ধ অবস্থা রয়েছে।
আহতদের মধ্যে ১৮ জন এখন বার্ন ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।
চিকিৎসক জানান, অগ্নিকাণ্ডে আহতদের চিকিৎসার জন্য এখন পর্যন্ত ২০০টিরও বেশি ছোট-বড় অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে দগ্ধ অবস্থায় ১৮ জন এবং একজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (ঢামেক) মারা গেছেন।
উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই দুপুর ১টার দিকে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজের একটি দোতলা ভবনে আছড়ে পড়ে। যার ফলে ৩৩ জন নিহত হন বলে নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এ দুর্ঘটনায় যুদ্ধবিমানের পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলামও মারা গেছেন।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ