চট্টগ্রামের বাকলিয়ায় জোড়া খুনের মামলায় সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্নাসহ তিনজনকে আগামী সাতদিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
রবিবার হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।
তিনি জানান, দুইজনকে গুলি করে হত্যার মামলায় আসামি তামান্নাসহ তিনজনেক চার সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের জন্য হাইকোর্ট আদেশ দিয়েছিলেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। আজ শুনানি শেষে হাইকোর্টের আদেশ সংশোধন করে তিনজনকে এক সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন।
গত ৩০ মার্চ চট্টগ্রামের বাকলিয়া এক্সেস রোড এলাকায় একটি প্রাইভেটকারকে ধাওয়া দিয়ে গুলি করে ঝাঁঝরা করা হয়। এতে দুই আরোহী নিহত হন। সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন ও সাজ্জাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা পুলিশের। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের একজন বখতিয়ার হোসেনের মা ফিরোজা বেগম বাকলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলায় সাজ্জাদ, তার স্ত্রী তামান্না শারমিনসহ সাতজনকে আসামি করা হয়। মামলার অন্য পাঁচ আসামি হলেন, মো. হাছান, মোবারক হোসেন, মো. খোরশেদ, মো. রায়হান ও মো. বোরহান। তারা সাজ্জাদের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
এদিকে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পুলিশ মো. বেলাল, মো. মানিক ও সজীব নামের তিনজনকে শনাক্তের পর গ্রেফতার করে। ফুটেজে দেখা যায়, সাতটি মোটরসাইকেলে ১৩ জন হামলায় অংশ নেন। তাদের হাতে ১০টি পিস্তল ও শটগান ছিল।
পরে তামান্না, মোবারক ও বোরহান হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করে। এর আগে, ৯ এপ্রিল বিচারপতি মুহম্মদ মাহবুব উল ইসলাম ও বিচারপতি মো.হামিদুর রহমানের হাইকোর্টে বেঞ্চ তাদের চার সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের আদেশ দেন।
ছোট সাজ্জাদ হত্যা, অস্ত্র ও চাঁদাবাজির ঘটনায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানার ১৫ মামলার আসামি। ১৫ মার্চ রাত ১০টার দিকে ঢাকার একটি শপিং সেন্টার থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গত ১৬ মার্চ ফেসবুকে তামান্নার এক ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিওতে তামান্নাকে বলতে দেখা যায়, ‘আমার জামাই গতকাল রাতে অ্যারেস্ট হয়েছে। এটা নিয়ে এতো হাই হুল্লাস (হা-হুতাশ) করার কিছু নাই। মামলা যখন আছে, অ্যারেস্ট হবে। এগুলো নিয়ে এতো টেনশন করা, দুঃখ প্রকাশ করা, কান্নাকাটি করার কিছুই নাই। আপনারা যারা ভাবতেছেন আমার জামাই অ্যারেস্ট হয়েছে, আর কোনোদিন বের হতে পারবে না, ওদের জন্য এক বালতি (বালতি) সমবেদনা। আমরা কাড়ি কাড়ি, বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছেড়ে আমার জামাইকে নিয়ে আসব। আমার জামাই বীরের বেশে চলে আসবে।’
সন্ত্রাসী সাজ্জাদের স্ত্রী আরও বলেন, ‘এখন যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদেরকে ছাড় দেওয়া হবে না; মাথায় রেখো। এতদিন আমরা পলাতক ছিলাম, এখন তোমাদের পলাতক থাকার পালা। আমার জামাই আইনি প্রক্রিয়া শেষে আমার কাছে আসবে। তখন খেলা শুরু হবে। খেলা মাত্র শুরু করছো তোমরা, শেষ করব আমরা। আমার জামাই সাজ্জাদের যারা সাপোর্টার আছো সবাই দোয়া করবা, যাতে ১০-১২ দিনের মধ্যে জামিন করাই ফেলতে পারি। ঠিক আছে, ধন্যবাদ।’
বিডি প্রতিদিন/কেএ