বিশ্বজুড়ে সমুদ্রের তাপমাত্রা বাড়তে থাকায় দ্রুত ভেঙে পড়ছে সমুদ্রের নিচে গঠিত প্রাকৃতিক প্রবাল প্রাচীর। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি পৃথিবীর প্রথম ‘জলবায়ু টিপিং পয়েন্ট’ (যে সীমায় পৌঁছালে পরিবেশের ক্ষতি আর ফিরিয়ে আনা যায় না)।
ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি অব এক্সেটারের এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, পৃথিবীর ৮৪ শতাংশেরও বেশি প্রবাল কোনো না কোনোভাবে প্রভাবিত (ক্ষতিগ্রস্ত) হয়েছে।
এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক স্টিভ স্মিথ বলেন, ভবিষ্যতে ঝুঁকি রয়েছে এমনটি নয়—এটি এখন ঘটছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবাল গবেষক মাইকেল স্টুডিভ্যানও বলেন, এটা আর দূরের বিপদ নয়, বরং চলমান এক বাস্তব সংকট।
বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, এই ধস যদি চলতে থাকে, তাহলে পৃথিবীর অন্য গুরুত্বপূর্ণ পরিবেশগত ব্যবস্থা যেমন হিমবাহ, আমাজন বনাঞ্চল ও সাগরের স্রোতপ্রবাহও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এর ফলে বিশ্বজুড়ে একের পর এক পরিবেশগত বিপর্যয় ঘটতে পারে।
প্রবাল প্রাচীর শুধু সামুদ্রিক প্রাণীর আশ্রয় নয়, এটি উপকূলরক্ষা, মাছের প্রজনন এবং কোটি মানুষের জীবিকা নির্ভরতার সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু অতিরিক্ত উষ্ণতায় প্রবাল তাদের শরীরে থাকা শৈবাল ত্যাগ করে, ফলে পুষ্টিহীন ও বিবর্ণ হয়ে যায়। একে বলা হয় ‘ব্লিচিং’।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতি থেকে বের হতে হলে দ্রুত গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ (কার্বন নির্গমন) কমানো এবং টেকসই পরিবেশনীতি গ্রহণ করা ছাড়া বিকল্প নেই। অন্যথায়, প্রবালের পর একের পর এক পৃথিবীর প্রাকৃতিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল