হংকং চায়নার বিপক্ষে পাঁচ দিনের ব্যবধানে আবারও মাঠে বাংলাদেশ। মাঠ ভিন্ন। দর্শক ভিন্ন। ফলাফলেও এসেছে ভিন্নতা। এবার অন্তত এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন হামজা-জামালরা। এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে হংকং চায়নার বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করেছে বাংলাদেশ। কাই টাক স্টেডিয়ামে এক পয়েন্ট পেলেও বাছাইপর্ব থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে লাল-সবুজের জার্সিধারীদের। সামনের দুই ম্যাচ জিতলেও আর শীর্ষস্থান দখল করতে পারবে না কোচ হাভিয়ের কাবরেরার শিষ্যরা।
ঢাকায় হংকংয়ের বিপক্ষে খেলা একাদশে বড় পরিবর্তন আনেন কোচ। সামিত সোম আর জায়ান আহমেদের পাশাপাশি অধিনায়কের আর্মব্যান্ড নিয়ে মাঠে নামেন তপু বর্মণও। আগের ম্যাচে শেষ দিকে খেলতে নেমে চমক দেখান যুক্তরাষ্ট্রে বেড়ে ওঠা জায়ান। দলে পরিবর্তন আনায় খেলাতেও পরিবর্তন হয়েছে। বেশ কয়েকটা সুযোগ তৈরি করেছেন বাংলাদেশের ফুটবলাররা। তবে সাদ উদ্দিন-ফাহামিদুলরা সেসব সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন। ম্যাচের প্রথমার্ধ্বে হংকং দাপট দেখালেও দ্বিতীয়ার্ধ্বে বাংলাদেশই এগিয়ে ছিল। প্রতিপক্ষের ডিফেন্স লাইনে প্রচণ্ড চাপ তৈরি করেন হামজারা। অবশ্য জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি বাংলাদেশ।
ম্যাচের ৩৪ মিনিটে তপু বর্মণ নিজেদের ডি বক্সের কাছে তারিক কাজীকে পাস দেন। তারিক বল নিয়ন্ত্রণে নিতে ব্যর্থ হন। ডি বক্সের ভিতরে বল পেয়ে যান হংকংয়ের ফার্নান্দো। গোল বাঁচাতে চার্জ করেন তারিক। ফাউল করে বল কেড়ে নেন তিনি। তবে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পট কিক থেকে গোল করেন হংকংয়ের অধিনায়ক ম্যাট অর। এগিয়ে যাওয়ার পর আক্রমণে আরও বেশি শক্তি বাড়ায় হংকং। বিপরীতে ম্যাচে ফেরার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে বাংলাদেশও। তবে প্রথমার্ধে বড় কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ার্ধ্বে কোচ কাবরেরার পরিকল্পনায় খেলতে শুরু করে বাংলাদেশ। প্রথমার্ধ্বের চেয়ে খেলায় ভিন্নতা দেখা যায়। আক্রমণের পরিমাণও বাড়ান হামজারা। ম্যাচের ৭৬ মিনিটে ১০ জনের দলে পরিণত হয় স্বাগতিক হংকং। দলটির ডিফেন্ডার অলিভার গারবিগ দ্বিতীয় হলুদ কার্ডের পর লাল কার্ড দেখেন। প্রতিপক্ষ ১০ জনের দল হওয়ার পর বাংলাদেশের আক্রমণ আরও বেড়ে যায়। ম্যাচের ৮৪ মিনিটে ফাহিমের ক্রসে ডি বক্সের ডান দিকে বল পান ফাহামিদুল। হেডে ডি বক্সের ভিতরে থাকা রাকিবকে বল নামিয়ে দেন ফাহামিদুল। হংকংয়ের গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়ান রাকিব। এ গোলেই এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। পরাজয়ের লজ্জা থেকে বাঁচলেও এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব থেকে পতন ঠেকাতে পারেননি কাবরেরা। দুই পয়েন্ট নিয়ে সি-গ্রুপের তলানিতে আছে বাংলাদেশ। ৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে হংকং চায়না।
এশিয়ান কাপে মেয়েরা চূড়ান্ত পর্বে খেলবে সামনের বছর। ছেলেরাও চূড়ান্ত পর্বে খেলার আশা করেছিল। হামজারা স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। বাংলাদেশের ফুটবল সমর্থকরাও আশায় বুক বেঁধেছিল। তবে সেই আশার গুড়ে বালি। ১৯৮০ সালে একবারই এশিয়ান কাপ খেলেছিল বাংলাদেশ। এরপর থেকেই এশিয়ান ফুটবলের শীর্ষ এ আসরে স্থান পাওয়ার জন্য লড়াই করছে লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। ২০২৭ সালে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত হবে এশিয়ান কাপ। এবার হয়নি। আরও চার বছরের অপেক্ষা বাড়ল বাংলাদেশের।
এদিকে সি-গ্রুপে হংকং চায়না চূড়ান্ত পর্বের পথে অনেকটা এগিয়ে গেছে। তাদের সামনে আছে সিঙ্গাপুর ও ভারত ম্যাচ। দুই ম্যাচের একটিতে জিতলেও চূড়ান্ত পর্ব নিশ্চিত হয়ে যেতে পারে দলটার। অবশ্য গত রাতে সিঙ্গাপুর জয় পেয়ে থাকলে হংকংয়ের জন্য কাজটা কঠিন হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে সামনের দুই ম্যাচেই জিততে হবে তাদের। বিশেষ করে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে।