ভারতের এক মর্মান্তিক ঘটনায় মাত্র ৪০ বছর বয়সেই হৃদ্রোগে (হার্ট অ্যাটাক) প্রাণ হারালেন শঙ্কর নামের এক কর্মজীবী। অফিসে অসুস্থতার জন্য ছুটি চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বার্তা পাঠানোর মাত্র ১০ মিনিট পরই ঘটে যায় এ মৃত্যু। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে গালফ নিউজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ছয় বছর ধরে একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন শঙ্কর। প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার কে ভি আইয়ার জানান, শঙ্কর ছিলেন একেবারেই সুস্থ–সবল, ধূমপান বা মদ্যপান করতেন না। তিনি বিবাহিত এবং একটি কন্যা সন্তানের জনক।
ঘটনার দিন স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৩৭ মিনিটে শঙ্কর ম্যানেজারকে বার্তায় লিখেছিলেন, “স্যার, তীব্র পিঠের ব্যথার কারণে আজ আসতে পারব না। অনুগ্রহ করে ছুটি মঞ্জুর করুন।” উত্তরে আইয়ার তাকে বিশ্রাম নিতে বলেন।
কিন্তু মাত্র ১০ মিনিট পরেই শঙ্কর হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। সকাল ১১টার দিকে তার মৃত্যুর খবর পৌঁছায় আইয়ারের কাছে।
পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক্সে আইয়ার লিখেছেন, “একজন মানুষ পুরোপুরি সচেতন অবস্থায় মৃত্যুর মাত্র ১০ মিনিট আগে আমাকে মেসেজ দিয়েছে। আমি ভেঙে পড়েছি। জীবন অনিশ্চিত, তাই সবার প্রতি সদয় হোন, আনন্দে বাঁচুন। কারণ পরের মিনিটে কী হবে কেউ জানে না।”
ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার ঝড় তোলে। অনেকেই লিখেছেন, পিঠে ব্যথা, অস্বাভাবিক ক্লান্তি, বমিভাব বা ঘাম হওয়ার মতো উপসর্গ হৃদ্রোগের প্রাথমিক সংকেত হতে পারে। কিন্তু সেগুলো প্রায়ই হজমের সমস্যা বা মাংসপেশির ব্যথা বলে ভুল ধরা হয়।
একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “জীবন সত্যিই অনিশ্চিত, অথচ আমরা তুচ্ছ কারণে লড়াই করি। তার আত্মার শান্তি কামনা করি।” অন্য একজন মন্তব্য করেন, “এখন এ ধরনের ঘটনা আমরা ঘন ঘন শুনছি। বিশেষ করে ৩৫–৪৫ বছর বয়সীদের মধ্যে। এমনকি নিয়ম মেনে চলা মানুষদেরও মৃত্যু হচ্ছে। আমরা আসলে কী উপেক্ষা করছি?”
অনেকে কোভিড-পরবর্তী সময়ে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ার দিকেও ইঙ্গিত করেছেন। কেউ কেউ লিখেছেন, দেশে প্রতিনিয়ত এরকম অসংখ্য ঘটনা ঘটছে, যা অনেক সময় সিসিটিভিতেও ধরা পড়ে। তাই সরকার ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের এই সমস্যাকে জরুরি অবস্থা হিসেবে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে প্রথম ৬০–৯০ মিনিটের মধ্যে চিকিৎসা পেলে বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তাই সাধারণ মানুষকে এসব প্রাথমিক লক্ষণ সম্পর্কে আরও বেশি সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
বিডি প্রতিদিন/আশিক