বরিশালের হিজলা উপজেলার কাউরিয়া বাজারের অর্ধশত বছরের এতিহ্যবাহী সুপারির প্রতি হাটে কোটি টাকা বেচাকেনা হয়। প্রতি শনি ও বুধবার এ হাট বসে। বছরের চার মাসব্যাপী এ হাটে কোনো বাকি বিক্রি হয় না। কেনাবেচা নগদে করা হয়। বাজারের আড়তদার ৩৫ বছর ধরে সুপারির পাইকারি ব্যবসায়ী হাজী জালালুদ্দিন জানান, দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে কাউরিয়া বাজারের সুপারি হাটের মতো এত বড় হাট আর নেই। সারা দেশ থেকে ক্রেতারা আসে এখানে। প্রতি বছর আশি^ন থেকে পৌষ মাস পর্যন্ত শনি ও বুধবার এ হাট বসে। আড়তদার মনির হোসেন জানান, এখানে স্থানীয়ভাবে ভি হিসেবে সুপারি ক্রয়-বিক্রয় হয়। এক ভি-তে সুপারি থাকে ২৮০ পিস। প্রতি ভি সাড়ে ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। বাজারে ৫০টি সুপারির আড়ত রয়েছে। আড়তদাররা প্রতি ভি সুপারি বেচাকেনায় ২০ টাকা করে আড়তদারী নেয়। বাজারের প্রবীণ শ্রমিক আকরাম আলী বলেন, ‘বরিশালের হিজলা, মেহেন্দিগঞ্জ ও মুলাদী থেকে এ হাটে সুপারি আসে। শনি ও বুধবার ভোর রাত থেকে বেচা-বিক্রি শুরু হয়। দেশের বিভিন্ন স্থান আসা ক্রেতারা সুপারি কিনে বস্তা ভরে নিয়ে যেতে পরদিন সকাল পর্যন্ত থাকতে হয় এ হাটে।’
সুপারির প্রতি হাটে ২০০ শ্রমিক কাজ করে। ২৭ বছর ধরে শ্রমিকের কাজ করা মো. রিয়াজ জানান, আড়তে সুপারি আসার পর ছোট, মাঝারি ও বড় সাইজ অনুযায়ী ভাগ করা হয়। পরে ৬০ থেকে ৩০ টাকা হারে তারা একেকটি বস্তায় সুপারি ভরে দেন। প্রতি হাটে তারা দেড় থেকে দুই হাজার টাকা আয় করেন। প্রবীণ জবেদ হাওলাদার বলেন, ‘কাউরিয়া বাজারে সুপারির মৌসুমে সুপারি এরপর সয়াবিন এবং পরে মুসুরি ও খেসারি ডালের হাট বসে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ ও নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা এসে এখান থেকে সুপারি, সয়াবিন ও মুসুর ও খেসারি ডাল কিনে নিয়ে যান।
হিজলা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ইলিয়াস শিকদার বলেন, ‘সুপারি হাটের জন্য টলঘর করা হয়েছে। এখন হস্তান্তরের অপেক্ষায় রয়েছে। হাট সেখানে গেলে আড়তগুলো সেখানে যাবে। তখন আর সমস্যা থাকবে না।’ হাটের সাব ইজারাদার রোকন তালুকদার জানান, হাটের দিন সুপারি হাট সাব ইজারা দেওয়া হয়। প্রতিবার হাটের দিন সর্বনিম্ন ২০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা একদিনের জন্য ইজারা নেওয়া হয়। ইজারাদাররা প্রতি ভি তিন টাকা করে খাজনা আদায় করেন।