বলিউড শাহেনশাহ অমিতাভ বচ্চনের প্রেমে মজেছিলেন বহুগামী অভিনেত্রী রেখা। অমিতাভের সঙ্গে প্রেমের গল্প নিজের মুখেই শোনালেন তিনি। ‘পরদেশিয়া...ম্যায় কেহতি হু তুনে মেরা দিল লে লিয়া।’ বাস্তবেও নাকি এমনটাই হয়েছিল। আবারও প্রকাশ্যে তাই স্বীকার করলেন রেখা।
‘দেখা এক খোয়াব তো ইয়ে সিলসিলে হুয়ে, দুর তক নিগাহ মে হ্যায় গুল খিলে হুয়ে।’ আজও বলিউডের এভারগ্রিন জুটি হিসেবে বিবেচিত রেখা-অমিতাভ। টিনসেল টাউনে কান পাতলেই শোনা যায় এক অনন্য প্রেমের কাহিনি। যার সূত্রপাত পহেলি নজরে। যদিও সেই প্রেমের কাহিনি নিয়ে সরাসরি কোনো কথা বলেননি দুজনের কেউই। এবার সেই গোপন কথাটি স্বীকার করলেন রেখা নিজেই। সম্প্রতি এক রিয়েলিটি শোতে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল বিষয়টি নিয়ে। তবে এ ক্ষেত্রেও কিন্তু সরাসরি প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করা হয়নি ‘ফরেভার ইয়ং’ অভিনেত্রীকে। বরং একটু ঘুরিয়ে পেঁচিয়েই বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়েছিল। তবে রেখা কিন্তু রাগঢাক করেননি এবার। বরং সাফ জানিয়ে দিলেন ‘পরদেশিয়া’র প্রেমে আজও হাবুডুবু খাওয়ার কথাটি। শোর উপস্থাপক জয় ভানুশালী বিচারকের আসনে বসে থাকা বিশেষ অতিথি রেখা এবং অপর বিচারক নেহা কক্করকে প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, ‘রেখা জি, আপনিই বলুন বিবাহিত কোনো পুরুষের জন্য কোনো মহিলা এতটা পাগল হতে পারেন?’ সঙ্গে সঙ্গে মোহময়ী স্বরে রেখার উত্তর- ‘মুঝসে পুছিয়ে না...।’ এরপরেই জিভ কেটে তিনি বলেন, ‘আমি কিন্তু কিছু বলিনি।’ হাসির রোল ওঠে গোটা সেটে। অনেকেই বলে ওঠেন, ‘গুড ওয়ান’। কিন্তু কেন? উত্তর খুঁজতে হলে পিছিয়ে যেতে হবে কিছুটা সময়। সময়টা ১৯৭৬ সাল। ‘দো অঞ্জান’ এর সেটে প্রথম পরিচয় হয়েছিল অমিতাভ-রেখার। তার আগেই ১৯৭৪ সালে জয়া বচ্চনের সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েছিলেন বিগ বি। বলিউডের তদানীন্তন অভিনেতাদের দাবি ছিল, সমাজের নানা নিষেধাজ্ঞার বেড়াজাল পেরিয়ে চুকে চুকে দুজনে দেখা করতেন এক বন্ধুর বাংলোয়। তখন অবশ্য গোপন কথাটি গোপনেই ছিল। তবে বাদ সাধল ১৯৭৮ সালের একটি ঘটনা। ‘গঙ্গা কি সৌগন্ধ’ ছবির সেটে রেখার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছিলেন এক সহঅভিনেতা। এবারে আর মেজাজ ধরে রাখতে পারেননি বলিউডের শাহেনশাহ। দু-চার কথা শুনিয়ে দিয়েছিলেন। ওই ঘটনার পর থেকেই তাদের গোপন প্রেম প্রকাশ্যে চলে আসে। যতবারই প্রেম নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল, দুজনেই বিষয়টি অস্বীকার করেছিলেন। তবে প্রেম কি আর লুকানো যায়? যশ চোপড়া একবার এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘সিলসিলা’ ছবির শুটিংয়ের সময় নায়ক নায়িকার প্রেম তুঙ্গে ছিল। এতকিছুর পরও কিন্তু টুঁ শব্দটি করেননি রেখা। এমনকি এও রটে গিয়েছিল যে দুজনে পালিয়ে বিয়ে পর্যন্ত সেরে ফেলেছেন। জয়া বচ্চনেরও চোখ এড়ায়নি দুই অভিনেতার বন্ধুত্ব। কথিত আছে, একবার রেখাকে নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন জয়া। ডিনার টেবিলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন- তিনি কোনোদিনও অমিতাভকে ডিভোর্স দেবেন না। এরপরই নাকি পিছিয়ে আসেন রেখা।
১৯৮৪ সালে এক পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রেখা বলেছিলেন, ‘মিস্টার বচ্চন কিছুটা প্রাচীনপন্থি। তাঁর সংসার ছিল, ছেলেমেয়ে ছিল। আমার সঙ্গে সম্পর্কের কথা স্বীকার করে নিলে, তার পরিবারের কী হতো? আমি কারও সংসার ভাঙতে চাইনি। তিনি প্রকাশ্যে স্বীকার করুন, এমনটাও চাইনি। আমি তাকে ভালোবাসি। তিনিও আমাকে। ব্যক্তিগত জীবনে যদি আমাকে না চিনতেন, তাহলে কষ্ট হতো। ১৯৯০ সালে বিয়ের পিঁড়িতেও বসেছিলেন রেখা। তবে বিয়ের সাত মাসের মধ্যে তার স্বামী আত্মঘাতী হয়েছিলেন। তবে সিঁথির সিঁদুর মুছে দেননি অভিনেত্রী। অনেক ভক্তের দাবি, অমিতাভের নামের সিঁদুর পরেন তিনি। যদিও রেখার দাবি, তার সিঁদুরে সাজতে ভালো লাগে। কালের স্রোতে খানিকটা হলেও মিলিয়ে গিয়েছিল এ দিল দেওয়া-নেওয়ার গল্প। তবে এদিনের ঘটনার পর আবারও বলিউডের প্রেক্ষাপটে অমিতাভ-রেখার প্রেম কাহিনি নিয়ে জোর শোরগোল শুরু হয়। এতে শেষ পর্যন্ত রেখা স্বীকার করতে বাধ্য হলেন অমিতাভই তার স্বপ্ন পুরুষ ছিলেন, এখনো আছেন, আমৃত্যু থাকবেন।