সাগর-নদী ও সুন্দরবনে মাছ ধরায় একের পর এক নিষেধাজ্ঞায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে উপকূলের জেলেরা। প্রায় সারা বছরই মৌসুম ভিত্তিক থাকছে কোন না কোন অবরোধ। এতো সব অবরোধের মধ্যে মাছ শিকারেরও তেমন একটা সুযোগ নেই জেলেদের। ফলে সংসারও চালাতে পারেন না তারা।
মোংলা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, প্রতি বছর জানুয়ারী মাসে ১৫ দিন ও ফেব্রুয়ারি মাসে ১৫ দিন চালানো হয় বিশেষ কম্বিং অপারেশন। অবৈধ জালের অভিযান চলাকালে কোন সহায়তা পান না জেলেরা।
এছাড়া প্রতি বছর ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ৫৮ দিন বন্ধ থাকে সমুদ্রে মাছ আহরণ। এ ৫৮ দিন সমুদ্রে সকল প্রজাতির মাছের প্রজনন মৌসুম। এ মৌসুমে কোন জেলেই কোন প্রজাতিরই মাছ শিকার করতে পারেন না সাগরে।
আর প্রতি বছর অক্টোবর মাসে ২২দিন অবরোধ থাকে সাগর ও নদীতে। এ ২২দিন ধরে মা ইলিশ সংরক্ষণে অভিযান চালানো হয়ে থাকে। এ ২২ দিনে সাগর-নদীতে সকল প্রকার জাল ফেলা ও মাছ ধরা বন্ধ থাকে জেলেদের। অপরদিকে প্রতি বছর ১ লা নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকে। এ সময়টাতে ঝাটকা ইলিশ সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে।
নিষেধাজ্ঞার এ লম্বা সময়ে কার্ডধারী জেলেরা দুই ধাপে চাল সহায়তা পেয়ে থাকেন। প্রথম দপায় ৮০ কেজি আর দ্বিতীয় দফায় ৮০ কেজি করে চাল পান জেলেরা।
স্থানীয় জেলে জাহিদ ব্যাপারী, চয়ন বিশ্বাস ও সিরাজ শিকদার বলেন, আমাদের পূর্ব পুরুষেরাও নদীতে নৌকা ও জাল বেয়েছে। আমরাও তাই করছি। কিন্তু এখন তো নদীতে আগের মত মাছ নেই। বন্ধের সময় যে চাল সহায়তা পাই তা দিয়ে আমাদের চলেনা। খুব কষ্ট হয়।
জাতীয় মৎস্যজীবি সমিতির মোংলা শাখা সভাপতি বিদ্যুৎ মন্ডল বলেন, এ এলাকায় প্রায় ৩০ হাজার জেলে রয়েছে। যাদের মধ্যে ১৫ হাজার জেলে নিবন্ধিত হওয়ার যোগ্য। কিন্তু এখানে নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ৬ হাজারের একটু বেশি। বাকিরা আবেদন দিয়েই যাচ্ছে কিন্তু কার্ড পাচ্ছে না।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, মৎস্য অধিদপ্তরের দেয়া নিষেধাজ্ঞাকালে জেলেদের চাল সহায়তা দেয়া হয়ে থাকে। তবে বনবিভাগের যে নিষেধাজ্ঞা থাকে সে সময় জেলেদের কোন কিছু দেয়া হয় না। তবে আশা করা যাচ্ছে আগামী বছর থেকে জেলেরা বনবিভাগের কাছ থেকে কিছু সহায়তা পাবেন।
বিডি-প্রতিদিন/তানিয়া