টুইটারের বিকল্প হিসেবে জনপ্রিয়তা পাওয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্লুস্কাই ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৪ কোটি ছাড়িয়েছে। এই অর্জনের পাশাপাশি প্ল্যাটফর্মটি ঘোষণা দিয়েছে নতুন ফিচার ‘ডিসলাইক’ বাটন চালুর।
ব্লুস্কাই কর্তৃপক্ষের মতে, এই ফিচার ব্যবহারকারীর ফিড বা টাইমলাইনকে আরও ব্যক্তিগতকরণে সহায়তা করবে, যাতে প্রত্যেকে নিজেদের পছন্দমতো কনটেন্ট দেখতে পারেন।
ব্লুস্কাইয়ের ভাষায়, কোনো পোস্টে ডিসলাইক দেওয়া হলে অ্যালগরিদম বুঝে নেবে যে ওই ধরনের কনটেন্ট ব্যবহারকারী দেখতে চান না। এর ফলে ভবিষ্যতে সেই ধরনের পোস্ট কম দেখানো হবে। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, শুধু প্রধান ফিড নয়—মন্তব্য বা রিপ্লাইয়ের ক্রমেও এই পরিবর্তনের প্রভাব পড়বে।
কোম্পানির দাবি, এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো ব্লুস্কাইকে আরও ‘মজার, খোলামেলা ও সম্মানজনক আলোচনার জায়গা’ হিসেবে গড়ে তোলা।
ডিসলাইক বাটনের পাশাপাশি ব্লুস্কাই আরও কিছু আলোচনা–নিয়ন্ত্রণ ও কনটেন্ট ফিল্টারিং ফিচার চালু করেছে। নতুন ফিচারগুলোর মধ্যে রয়েছে উন্নত রিপ্লাই কন্ট্রোল, টক্সিক বা বিষাক্ত মন্তব্য শনাক্তে উন্নত মডেল, ফিড সাজানোর নতুন অ্যালগরিদম এবং ইন্টারফেস সংক্রান্ত কিছু নকশা পরিবর্তন।
এ ছাড়া ব্যবহারকারীরা এখন নিজস্ব অভিজ্ঞতা আরও সহজে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হয়েছে ‘মিউটেড ওয়ার্ডস’, কনটেন্ট ফিল্টার, ব্লক লিস্ট এবং অন্য ব্যবহারকারীর তৈরি মডারেশন সার্ভিসে সাবস্ক্রাইব করার সুযোগ।
ব্লুস্কাই তাদের অ্যালগরিদমে যুক্ত করেছে ‘সোশ্যাল নেইবারহুড’ নামে নতুন এক ধারণা। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীর সঙ্গে বেশি যোগাযোগে থাকা ব্যক্তিদের মন্তব্য ও রিপ্লাইকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। কোম্পানির ভাষায়, এতে ব্যবহারকারীর ফিডে প্রদর্শিত আলোচনাগুলো হবে “আরও প্রাসঙ্গিক ও পরিচিত।”
বিশ্লেষকদের মতে, এই উদ্যোগ সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বী মেটার থ্রেডস–এর দুর্বলতা মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ। কারণ থ্রেডসে অনেক সময় ব্যবহারকারীরা এলোমেলো ও সংযোগহীন কথোপকথন দেখতে পান।
সম্প্রতি প্ল্যাটফর্মটির মডারেশন নীতিমালা নিয়ে কিছু ব্যবহারকারী সমালোচনা করছিলেন। তাদের অভিযোগ ছিল, বিতর্কিত অ্যাকাউন্টগুলোতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে ব্লুস্কাই জানিয়েছে, তারা নিষেধাজ্ঞার বদলে ব্যবহারকারীদের হাতে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দিতে চায়, যাতে প্রত্যেকে নিজস্ব অভিজ্ঞতা নিজের মতো করে গড়ে নিতে পারেন।
৪ কোটি ব্যবহারকারীর মাইলফলক অতিক্রমের সঙ্গে ব্লুস্কাইয়ের এই নতুন ফিচারগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে- প্ল্যাটফর্মটি এখন আর কেবল টুইটার (এক্স)–এর বিকল্প নয়, বরং নিজস্ব সংস্কৃতি ও অভিজ্ঞতার এক নতুন সামাজিক মাধ্যম হয়ে উঠতে চায়।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম