প্রায় দুই দশক পর আবারও বার্বাডোসের মাটিতে দেখা মিলেছে এক ক্ষুদ্রাকৃতির সাপের, যার আকার এতটাই ছোট যে একে কৃমি বলে ভুল হতে পারে! সাপটির নাম বার্বাডোস থ্রেডস্নেক। বিশ্বের সবচেয়ে ছোট সাপ হিসেবে পরিচিত এই প্রাণীটিকে সম্প্রতি আবার খুঁজে পেয়েছে পরিবেশবিদরা।
বার্বাডোসের পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সংরক্ষণ মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক সংরক্ষণ সংস্থা রি-ওয়াইল্ড-এর যৌথ পরিবেশ জরিপে এই সাপটির খোঁজ মেলে চলতি বছরের মার্চ মাসে। দ্বীপটির কেন্দ্রীয় এলাকায় একটি গাছের মূলের নিচে চাপা পড়ে থাকা পাথর সরাতেই দেখা মেলে অতি বিরল এই সাপটির।
মাত্র ৮-১০ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের এই সাপটি এতটাই ছোট যে এটি একটি মার্কিন কোয়ার্টার কয়েনের ওপর সহজেই গুটিয়ে থাকতে পারে।
মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প কর্মকর্তা হিসেবে এই আবিষ্কারে অংশ নেয়া কনর ব্লেডস বলেন, বার্বাডোস থ্রেডস্নেক অন্ধ প্রকৃতির সাপ। এরা অত্যন্ত লুকিয়ে চলার স্বভাবের এবং খুবই দুর্লভ।
১৮৮৯ সালের পর থেকে এই সাপটির নিশ্চিত উপস্থিতির তথ্য মাত্র কয়েকটি পাওয়া গিয়েছে, ফলে সাধারণ মানুষের কাছে একে দেখা এক বিরল সৌভাগ্যই বলা চলে।
সাপচির বৈশিষ্ট্য হলো পিঠ বরাবর কমলা রঙের স্ট্রাইপ, মাথার পাশে ছোট ছোট চোখ আর নাকের ডগায় ছোট একটি স্কেল।
রি-ওয়াইল্ডের জাস্টিন স্প্রিংগার বলেন, অনেকদিন ধরে খোঁজার পর যখন হঠাৎ করে সাপটি দেখি, বিশ্বাস হচ্ছিল না। এমন একটা আবিষ্কারের আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।
এই সাপের পুনরাবিষ্কার একটি বড় বিজয় হলেও এর অস্তিত্ব এখনো হুমকির মুখে। বার্বাডোসের মাত্র ২ শতাংশ প্রাকৃতিক বন এখনও অবশিষ্ট আছে। উপনিবেশিক আমল থেকে কৃষিকাজের জন্য ব্যাপক বন ধ্বংসে দ্বীপটি তার প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্র হারিয়েছে।
উল্লেখ্য, এই সাপটি যৌন প্রজননের মাধ্যমে বংশবিস্তার করে এবং একটি মাত্র ডিম পাড়ে। তুলনায়, বহিরাগত প্রজাতি ব্রাহ্মিণী ব্লাইন্ড স্নেক স্ব-প্রজনন করতে পারে—যা এই বিরল থ্রেডস্নেকের টিকে থাকার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
জাস্টিন স্প্রিংগার বলেন, এই সাপের পুনরাবিষ্কার আমাদের মনে করিয়ে দেয় বার্বাডোসের বনভূমি অত্যন্ত মূল্যবান। শুধু এই সাপের জন্য নয়, বরং অন্যান্য গাছপালা, প্রাণী ও আমাদের ঐতিহ্যের জন্যও বন সংরক্ষণ জরুরি।
সূত্র: সায়েন্স এলার্ট
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল