হরেকরকমের পাখি, বিদেশি প্রজাতির কুকুর-বিড়াল, খরগোশ, ঘোড়া- কী ছিল না সেখানে! এসব পোষা প্রাণী দেখতে ছিল মানুষের উপচে পড়া ভিড়। গতকাল রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রাণী ও প্রাণের মিলনমেলায় গিয়ে দেখা গেল এই দৃশ্য। ‘দেশ হোক সকল প্রাণীর নিরাপদ আশ্রয়স্থল’-এই স্লোগান নিয়ে বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীর আয়োজন করে। এ অনুষ্ঠানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মিডিয়া পার্টনার ছিল বাংলাদেশ প্রতিদিন ও টি স্পোর্টস।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই দূরদূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা ভিড় করেন স্টলে স্টলে বিভিন্ন পোষা প্রাণী দেখতে। সেখানে ছিল চিকিৎসা কেন্দ্রও। অনেকেই নিজের পোষা প্রাণী নিয়ে এসেছিলেন। প্রদর্শনীতে ছিল জার্মান শেফার্ড ও মুধোল হাউন্ড জাতের ১০টি কুকুর। ছিল হেজহগ, হেমস্টার, সুগার গ্লাইডারের মতো বিদেশি পোষা প্রাণীও।
এ ছাড়া ম্যাকাও, অ্যামাজন প্যারট, আফ্রিকান গ্রে প্যারট, গালা কাকাতুয়া, সান কন্যুর, রেইনবো লরীকিট ও বাজরিগরসহ বিদেশি প্রজাতির নানান রঙের পাখি নজর কেড়েছে। বিশেষ আকর্ষণ ছিল নানা প্রজাতির কবুতর- স্প্যানিস, পটার, গরগরিও, ঝর্ণা সার্টিন, ব্ল্যাকলেস সার্টিন এবং ব্লু সার্টিন। রঙিন পালক আর চকচকে শরীরের এই কবুতরগুলো দেখতে ভিড় করেন ছোট-বড় সবাই। প্রাণিপ্রেমীরা বলছেন, এমন প্রদর্শনী শুধু বিনোদন নয়, বরং প্রাণীর প্রতি ভালোবাসা ও যত্নের সংস্কৃতি ছড়িয়ে দিতে বড় ভূমিকা রাখে।
১১ বছর বয়সি তাসনিম আফরোজের পাখি ভালো লাগে। বিড়ালও তার পছন্দ। প্রদর্শনীতে নিজের পোষা বিড়াল নিয়ে বাবার সঙ্গে পশু-পাখি দেখতে এসে বেশ ফুরফুরে মেজাজে ঘুরতে দেখা যায় তাকে। তাসনিম বলেন, আমার পশু-পাখি অনেক ভালো লাগে। আমাদের ঘরে তিনটি বিড়াল আছে।
বাবার সঙ্গে এখানে অনেক কিছু দেখতে পেয়েছি। এখানে যে ঘোড়াগুলো আনা হয়েছে সেগুলো দেখে অনেক ভালো লাগছে। প্রদর্শনীতে বাজরিগর সোসাইটি অব বাংলাদেশের একটি স্টল ঘিরে ছিল শিশুদের ভিড়। সেখানে ছিল হরেক রকমের বাজরিগর পাখি। রাসেল নামে সংগঠনটির এক সদস্য বলেন, আমরা বাজরিগরের মিউটিশন নিয়ে কাজ করি। বাজরিগর এমন একটি পাখি যেটা বিভিন্ন রঙের হয়। এটা পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি পোষা প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম। কেউ যাতে বন্য পাখি না পোষেন, তাই আমরা এসব পাখি নিয়ে কাজ করছি।
বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম সমন্বয়ক আতিকুর রহমান রুম্মন বলেন, সারা বাংলাদেশের প্রায় ১০০ সংগঠন নিয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে আমরা এ উদ্যেগ নিয়েছি। সবাইকে আমরা একটি ছাতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। আজ এ অনুষ্ঠানে সারা বাংলাদেশ থেকে অনেক প্রাণিপ্রেমী এসেছেন। এখানে পশু ডাক্তারও এসেছেন।
তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ডাকে আমরা আজ এক হয়েছি। উনি পশুপাখি অনেক ভালোবাসেন।