কোরবানি ঈদের ছুটি কাটিয়ে রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোয় কেনাবেচা এখনো স্বাভাবিক গতি পায়নি। পাইকারি-খুচরা দুই পর্যায়ের বাজারেই ভিড় কম। এর মধ্যেই কিছু মাছের দামে হালকা ঊর্ধ্বমুখী প্রভাব দেখা গেলেও সবজির বাজার এখনো তুলনামূলক স্থিতিশীল। কিছু কিছু সবজির পাশাপাশি মুরগির দামও কমেছে। গতকাল সকালে কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, আড়তে বেচাকেনার তেমন জোয়ার নেই। খুচরা বাজারেও ক্রেতা কম। দোকানিদের ভাষ্যমতে ঈদের ছুটি পুরোপুরি শেষ না হওয়ায় অনেকেই এখনো ঢাকায় ফেরেননি। ফলে স্বাভাবিক বাজারচিত্র গড়ে ওঠেনি। হোসাইন শিকদার নামে এক সবজি ব্যবসায়ী বাংলাদেশ
প্রতিদিনকে বলেন, ‘মানুষ এখনো গ্রামের বাড়িতে। ঢাকায় ফিরলে বাজারে ভিড় বাড়বে। এখন সরবরাহও সীমিত, কারণ বিভিন্ন জেলা থেকে পণ্য আসা পুরোপুরি শুরু হয়নি।’
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজির দাম এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যেই আছে। ঢ্যাঁড়শ, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, পেঁপে, বেগুন খুচরা বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ৩০-৪০ টাকা ছিল। এ ছাড়া পটোল ৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। বরবটি, কাঁকরোল, করলা, কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। কাঁচা মরিচ ৬০ টাকা। আলু ২০-২৫ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, কয়েকটি পণ্যের ক্ষেত্রে দাম কিছুটা ওঠানামা থাকলেও অধিকাংশ সবজি এখনো ২৫ থেকে ৬০ টাকার মধ্যেই মিলছে। খুচরা বিক্রেতা মোহাম্মদ হোসেন জানান, ‘এখন মূলত মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষই বাজারে আসছেন। পাইকাররা কিছু পণ্যের দাম বাড়িয়েছেন ঠিকই, কিন্তু ক্রেতা কম থাকায় বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে না। সবজির সরবরাহও শুরু হওয়ায় দাম বাড়ার কোনো সুযোগ নেই। তাই সবজির বাজার আপাতত স্থিতিশীল।’ তবে ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, বর্ষা মৌসুমের কারণে আগামী সপ্তাহ থেকে কিছু সবজির দাম বাড়তে পারে। বিশেষ করে সরবরাহসংকট দেখা দিলে পণ্যমূল্যে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে মাছের বাজারেও রয়েছে ক্রেতাসংকট। তবে তুলনামূলকভাবে মাছের সরবরাহ আরও কম। বাজারে কাতলা ও রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজি ৩৫০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকা ছিল। পাবদা ৩৫০, তেলাপিয়া ও পাঙাশ ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যদিও কেজিতে মাছের দাম ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি থাকলেও সংকট অনুভব করছেন ক্রেতারা। সরবরাহ বাড়ায় কিছুটা দাম কমেছে গরিবের আমিষ খ্যাত ব্রয়লার মুরগির। বাজারে এখন ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা, যা ঈদের আগের সপ্তাহেও ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। ডিমের বাজারে তেমন বড় কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। প্রতি ডজন ডিম বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। তবে পাড়ামহল্লার দোকানে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায় ডিম বিক্রি হতে দেখা গেছে।