বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে টানা অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন সংস্থাটির কর্মচারীদের একটি অংশ। এ অবস্থায় মূল ফটক আটকানোর পাশাপাশি সব বিভাগের গেটে তালা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ফলে গতকালও বন্ধ থেকেছে সব ধরনের নাগরিকসেবা।
গতকাল ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন’ ও ‘ঢাকাবাসীর ব্যানারে’ ইশরাকের সমর্থকেরা নগর ভবনের ভিতরের ফটকে অবস্থান নিয়ে কিছুক্ষণ পরপর নগর ভবন প্রাঙ্গণে মিছিল করেন। এ সময় তারা ‘শপথ শপথ শপথ চাই, ইশরাক ভাইয়ের শপথ চাই’ ‘মেয়র নিয়ে টালবাহানা, সহ্য করা হবে না’ ‘চলছে লড়াই চলবে, ইশরাক ভাই লড়বে’ স্লোগান দিতে থাকেন। তাদের আন্দোলনের ফলে গত ১৫ মে থেকে নগর ভবনের সব নাগরিকসেবা বন্ধ রয়েছে। কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের এক সদস্য বলেন, দুই দফায় কোর্ট রায় দেওয়ার পরও ইশরাক হোসেনকে শপথ নিতে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা ইশরাককে মেয়র হিসেবে পেতে চাই। এই দাবিতেই আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া আরেক কর্মচারী বলেন, ঢাকার জনগণ যেমন ইশরাক ভাইকে মেয়র হিসেবে দেখতে চায়, ঠিক তেমনি ডিএসসিসি সব কর্মচারীরাও তাকে মেয়র হিসেবে চায়।
গত ১৫ মে থেকে আমরা টানা কর্মসূচি পালন করে আসছি। যে কারণে সব ধরনের সেবা কার্যক্রম বন্ধ আছে। আমাদের মেয়র, জনগণের মেয়র ইশরাক ভাই দায়িত্ব গ্রহণ করলে, মেয়র হিসেবে বসলে আমরা কাজে ফিরে যাব। তা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবেই।
প্রসঙ্গত ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। সে সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেন ইশরাক। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গেল ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে। এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা কওে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু তাকে যেন শপথ পড়ানো না হয় সেজন্য গত ১৪ মে হাই কোর্টে রিট আবেদন করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে গত ১৫ মে থেকে আন্দোলনে নামেন ইশরাক সমর্থকরা। তাদের আন্দোলনের কারণে ডিএসসিসি নগর ভবন কার্যত অচল হয়ে পড়ে।