উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের তদন্তে চীনের বিশেষজ্ঞ দল সহায়তা করতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী। গতকাল রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে রাজধানী ঢাকা থেকে যুদ্ধবিমান ঘাঁটি সরানো যাবে না বলেও জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিমানবাহিনীর জরুরি সমন্বয় কেন্দ্রের প্রধান সমন্বয়ক এয়ার কমোডর মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার দিন উদ্ধারকাজে বিমানবাহিনী অংশ নেয় এবং তদন্ত কমিটিও গঠিত হয়। তদন্তে আন্তর্জাতিক সহায়তা দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ নির্ধারণে সহায়ক হবে। তদন্তকাজে সহায়তার জন্য চীনের একটি বিশেষজ্ঞদল আসার সম্ভাবনা রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে বিমানবাহিনী প্রধানের দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনী দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। জরুরি সহায়তা কেন্দ্র থেকে আহতদের চিকিৎসা, আহতদের অবস্থান ও চিকিৎসা-সংক্রান্ত তথ্য, নিহতদের পরিচয় যাচাই ও পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ, নিহতদের দাফন ও সৎকার কার্যক্রম সমন্বয়, হাসপাতালে রক্তদাতা প্রেরণ এবং সংগ্রহে সহায়তা এবং যে কোনো জরুরি তথ্য, পরামর্শ ইত্যাদি সহায়তায় কাজ করে যাচ্ছে।’ হতাহতদের যতদিন প্রয়োজন হবে ততদিন বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে বলেও জানান মিজানুর রহমান। ঢাকায় জঙ্গি বিমান প্রশিক্ষণ ঘাঁটি সরানো হবে কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বিমান পরিচালনা পরিদপ্তরের পরিচালক এয়ার কমোডর শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকার আকাশ প্রতিরক্ষায় জঙ্গিবিমান ঘাঁটি গুরুত্বপূর্ণ। ঘাঁটি সরানোর কোনো পরিকল্পনা নেই। বিশ্বের অনেক রাজধানীতেও এমন ঘাঁটি আছে।’
মাইলস্টোনে অস্থায়ী চিকিৎসা ক্যাম্প চালু বিমানবাহিনীর : রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে অস্থায়ী চিকিৎসা ক্যাম্প চালু করেছে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী। গতকাল থেকে অস্থায়ী এই চিকিৎসা ক্যাম্প শুরু হয়। ক্যাম্পে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহত শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিকিৎসা ও কাউন্সিলিং সহায়তা দিতে এ ক্যাম্প চালু করা হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহ ক্যাম্প চালাবে মেডিকেল টিম। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে।
অভ্যন্তরীণভাবে ক্যাম্প পরিচালনার বিষয়ে বিমানবাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, স্কুল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ছাত্র-অভিভাবকদের ক্যাম্প সম্পর্কে জানানো হয়েছে। এতে মানসিক ও শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের সেবা দেওয়ার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি সহায়তার প্রয়োজনীয়তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিমানবাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার ও চিকিৎসক শিহাব আলী জানান, ঘটনার সময় ক্যাম্পাসে থাকা অনেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। কেউ কেউ ঘুমাতে পারছে না, দুঃস্বপ্নে আক্রান্ত হচ্ছে। তাদের পাশে দাঁড়াতেই এ উদ্যোগ। পাশাপাশি পুড়ে যাওয়া বা আগুনের আঁচ লাগা শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা, ড্রেসিং ও ওষুধ দেওয়া হচ্ছে।