পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার একটি ওয়ার্ড কমিটি নিয়ে স্থানীয় বিএনপির মধ্যে তুঘলকি কাণ্ড শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত ও আওয়ামী লীগের দোসররা কমিটিতে স্থান পাওয়ায় দলের শীর্ষ পর্যায়ে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতেও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্থানীয় বিএনপির মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন মঠবাড়িয়ার ১১ নম্বর বড়মাছুয়া ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মোশাররফ হোসেন। অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, গত ২০ জুন মঠবাড়িয়া উপজেলা বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদ বাছাই করা হয়। সেদিন বিএনপির সাধারণ নেতা-কর্মীদের দাবি ছিল, বিতর্কিত ও আওয়ামী লীগের কোনো দোসর যেন দলের প্রাথমিক সদস্য হতে না পারে। তাদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শামীম মৃধা ও সদস্য সচিব আবু বকর সিদ্দিক বাদল ঘোষণা করেছিলেন যে, আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে যাদের ছবি কিংবা ভিডিও আছে তারা কেউ বিএনপির সদস্য হতে পারবে না। কিন্তু তাদের সিদ্ধান্ত অমান্য করে ‘ক’ গ্রুপের ১০০ সদস্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের দোসরদের সদস্যপদ দেওয়া হয়। শুধু সদস্যপদই নয় তারা নির্বাচনে প্রার্থীও হয়েছেন। ১৬ জুলাই নির্বাচন শুরুর আগে ওইসব দোসরদের সদস্যপদ ও প্রার্থিতা বাতিলের জন্য তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা দাবি জানান। কিন্তু তাদের দাবি গ্রাহ্য করা হয়নি। অবশেষে নির্বাচনে বিশেষ মহলের সঙ্গে আঁতাত করে আওয়ামী লীগের দোসররাই বিজয়ী হয়। অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয় যে, বড়মাছুয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি হারুন অর রশিদ, ফারুক খান সাধারণ সম্পাদক, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি জাহাঙ্গীর ঢালী, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ খান, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি হালিম শিকদার, সাধারণ সম্পাদক ছগীর আকন, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হাওলাদার, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর খান এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি মীর মাজেদুল আলম বিতর্কিত এবং আওয়ামী লীগের দোসর।
মঠবাড়িয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শামীম মিয়া মৃধা কমিটিতে আওয়ামী লীগ এবং তাদের দোসরদের বিএনপির কমিটিতে প্রবেশের সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘কমিটি গঠনের সময় আমরা তৃণমূলের নেতারা কেন্দ্রীয় নেতাদের আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের বিষয়ে অবহিত করি। কমিটি করতে আসা কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দোসরদের ডকুমেন্ট পেশ করলেও নেতারা তা আমলে নেননি।’ আওয়ামী লীগ ও দোসরদের মাধ্যমে গঠিত কমিটিতে দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।