গ্রিসপ্রবাসী রফিকুল ইসলাম, প্রবাস জীবনের দীর্ঘ ১০ বছর পর প্রথমবারের মতো ছুটিতে দেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ১৮ মে তার ফ্লাইট নির্ধারিত ছিল। আত্মীয়স্বজনের জন্য উপহার কিনতে ব্যস্ত ছিলেন তিনি। কিন্তু আগুনে পুড়ে গেছে তার পাসপোর্ট, রেসিডেন্স কার্ড, এয়ার টিকিটসহ সব মালামাল। হতাশাভরা কণ্ঠে রফিকুল বলেন, ‘সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। দেশে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু আগুনে সব পুড়ে ছাই হয়েছে। এখন কীভাবে দেশে যাব, কিছুই বুঝতে পারছি না। গ্রিসের ইলিয়া প্রদেশের নেয়া মানোলাদা এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হয়েছে ৭ শতাধিক বাংলাদেশি কৃষিশ্রমিকের অস্থায়ী বসতালয়, যা স্থানীয়ভাবে ‘পারাঙ্গা’ নামে পরিচিত। আগুনে পাসপোর্ট, রেসিডেন্স কার্ড, এয়ার টিকিট, নগদ অর্থসহ প্রবাসীদের প্রয়োজনীয় সবকিছুই পুড়ে গেছে। ফলে অনেকেই খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাতে বাধ্য হয়েছেন। দেখা দিয়েছে খাবার, পানি, চিকিৎসা ও আশ্রয়ের তীব্র সংকট। আশরাফুল ইমলাম নামে ভুক্তভোগী আরেক প্রবাসী বলেন, ‘আমাদের থাকার জায়গা, খাবার, পাসপোর্ট, ডকুমেন্টস সবকিছু পুড়ে গেছে। এখন খোলা আকাশের নিচে থাকতে হচ্ছে। সরকারি সাহায্য না পেলে কীভাবে বাঁচব, জানি না।’ সুমন নামে এক প্রবাসী বলেন, ‘বৈধতা পাওয়ার জন্য কয়েক বছর ধরে বসবাসের বিভিন্ন ডকুমেন্ট সংগ্রহ করছিলাম। আগুনে সব পুড়ে ছাই হয়েছে। এখন কী করব কিছুই বুঝতেছি না।’ টিপু আহমেদ নামে আরেক প্রবাসী বলেন, ‘বছরের পর বছর সঞ্চয় করছিলাম দেশে ফেরার জন্য। আগুনে পাসপোর্ট, পরিচয়পত্র, নগদ অর্থ সব হারিয়েছি। এখন খোলা আকাশের নিচে দিন কাটছে।’
এদিকে, ঘটনার পরদিন গ্রিসে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব রাবেয়া বেগমের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তারা ক্ষতিগ্রস্তদের খোঁজখবর নেন এবং নতুন পাসপোর্টসহ অন্যান্য সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তারা স্থানীয় মেয়র, ফায়ার সার্ভিস ও বিভিন্ন মালিকপক্ষের সঙ্গেও আলোচনা করেন এবং প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য স্থায়ী ও নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান।