শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে আলটিমেটাম দিয়েছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষকরা। সাত কার্যদিবসের মধ্যে কুয়েটে সহিংস ঘটনা ও শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত না হলে সব প্রশাসনিক কাজ থেকে বিরত থাকবেন শিক্ষকরা।
গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে কুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই সঙ্গে পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী একাডেমিক কার্যক্রম থেকেও শিক্ষকরা বিরত রয়েছেন। এর ফলে প্রায় আড়াই মাস পর কুয়েট খুললেও গত দুই দিনে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। শিক্ষক সমিতির জরুরি সাধারণ সভা শেষে সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. ফারুক হোসেন জানান, সব শিক্ষকের উপস্থিতিতে উ™ূ¢ত পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষকরা সুনির্দিষ্ট দাবি জানিয়ে সাত দিনের আলটিমেটাম দিয়েছেন। শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তি নিশ্চিত করা না হলে সাত কার্যদিবসের পর কোনো শিক্ষক প্রশাসনিক কার্যক্রমেও অংশ নেবেন না। সেই সঙ্গে একাডেমিক কার্যক্রম থেকেও তারা বিরত থাকবেন।
এর আগে কুয়েটে নতুন নিয়োগকৃত অন্তর্বর্তীকালীন ভিসি ড. মো. হযরত আলী গত তিন দিনে শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেন। তিনি তাদের ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান। কিন্তু শিক্ষকরা তাতে সাড়া দেননি। অন্যদিকে শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন কুয়েট শিক্ষার্থীরা। গতকাল সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটরিয়াম কক্ষে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেন নতুন ভিসি। তিনি সেখানে শিক্ষার্থীদের বিকাল ৩টার মধ্যে শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে লিখিত আবেদন করার অনুরোধ করেন। শিক্ষার্থীরা বলছেন, গত আড়াই মাস কুয়েট বন্ধ থাকায় একাডেমিক কার্যক্রমে তারা পিছিয়ে পড়েছেন।
সেই সঙ্গে টার্ম পরীক্ষাগুলো পিছিয়ে গেছে। তারা বলেন, শিক্ষকরা আমাদের পিতৃতুল্য। আমাদের আন্দোলন ছিল সাবেক ভিসির বিরুদ্ধে, সাধারণ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নয়। তারা সার্বিক দিক বিবেচনায় শিক্ষার্থীদের ক্ষমা করে দিয়ে শিক্ষকদের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করার আবেদন জানান।
উল্লেখ্য, ৪ মে বিশ্ববিদ্যালয় খুললেও একাডেমিক কার্যক্রমে শিক্ষকরা যোগ দেননি। তারা বলছেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে হামলার ঘটনার সময় কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা হয়। সেই সঙ্গে শিক্ষকদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ধরনের কটূক্তি করা হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাসে ফিরবেন না বলে আন্দোলনে অনড় রয়েছেন।