পরকাল বা শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস ঈমানের মৌলিক স্তম্ভের অন্তর্ভুক্ত। এ ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় বেশি গুরুত্বপূর্ণ—
১. পুনরুত্থানে বিশ্বাস : মৃত ব্যক্তিদের কবর থেকে আবার জীবিত করা হবে। সব মানুষ আল্লাহর সামনে দণ্ডায়মান হবে। তাদের পোশাক ও জুতা এক জায়গায় একত্র করা হবে।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের এরপর মৃত্যুবরণ করতে হবে। অতঃপর নিশ্চয়ই তোমাদের কিয়ামতের দিন আবার ওঠানো হবে।’ (সুরা : মুমিনুন, আয়াত : ১৫-১৬)
২. হিসাব-নিকাশ ও মিজানে বিশ্বাস : সৃষ্টিজীব দুনিয়ায় যেসব কর্ম করেছে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাদের সেসব কর্মের হিসাব নেবেন। মিজান বা পাল্লায় আমলগুলো ওজন করা হবে।
যার বদ আমলের চেয়ে নেক আমলের পাল্লা ভারী হবে সে জান্নাতি হবে। যার নেক আমলের চেয়ে বদ আমলের পাল্লা ভারী হবে সে জাহান্নামি হবে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘অতঃপর যার ডান হাতে তার আমলনামা দেওয়া হবে, অচিরেই তার হিসাব-নিকাশ সহজ করা হবে। বস্তুত সে তার পরিবারের সদস্যদের কাছে সন্তুষ্টচিত্তে ফিরে যাবে।
কিন্তু যার আমলনামা তার পিঠের পেছনের দিক থেকে দেওয়া হবে, সে অচিরেই মৃত্যুকে ডাকবে এবং সে উত্তপ্ত জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ (সুরা : ইনশিকাক, আয়াত : ৭-১২)
৩. জান্নাত ও জাহান্নামে বিশ্বাস : জান্নাত হলো চিরস্থায়ী সুখ-শান্তির স্থান। মহান আল্লাহ মুমিনদের জন্য তা তৈরি করে রেখেছেন। আর জাহান্নাম চিরস্থায়ী দুঃখ-কষ্টের স্থান। আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলের অবাধ্যদের জন্য আল্লাহ তা তৈরি করে রেখেছেন।
কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তোমরা তোমাদের রবের ক্ষমা ও জান্নাতের জন্য দ্রুত অগ্রসর হও। যার প্রশস্ততা হলো আসমান ও জমিন সমতুল্য, যা মুত্তাকিদের জন্য তৈরি করা হয়েছে।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৩৩)
অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘অতঃপর যারা হতভাগ্য তারা থাকবে দোজখে। এবং সেখানে তাদের জন্য থাকবে চিৎকার ও আর্তনাদ।’ (সুরা : হুদ, আয়াত : ১০৬)
এই তিনটি মৌলিক বিশ্বাসের সঙ্গে আরো ১৭টি বিষয় সংযুক্ত।
যথা : ১. কিয়ামতের আলামতের ওপর বিশ্বাস। ২. মৃত্যুর প্রতি ঈমান। ৩. কবরের প্রশ্ন-উত্তরে বিশ্বাস। ৪. কিয়ামতের দিন শিঙায় ফুৎকারের প্রতি ঈমান। ৫. মৃত্যুর পর জীবিত হওয়ার প্রতি বিশ্বাস। ৬. কিয়ামতের ময়দানে জড়ো হওয়ার প্রতি ঈমান। ৭. পৃথিবীর আদি-অন্ত সব মানুষের মহাসমাবেশ। ৮. আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের ওপর ঈমান। ৯. আমলনামা পেশ করা ও হিসাব-নিকাশ। ১০. বিভিন্ন ডকুমেন্টসের ভিত্তিতে সাক্ষ্যগ্রহণ এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সাক্ষ্যদান। ১১. ডান হাতে কিংবা বাঁ হাতে আমলনামা প্রদান। ১২. মিজানের দাঁড়িপাল্লায় বিশ্বাস। ১৩. পুলসিরাত পাড়ি দেওয়া। ১৪. জালিম থেকে মাজলুমের প্রতিশোধ গ্রহণ। ১৫. জান্নাত ও জাহান্নামের ওপর ঈমান। ১৬. হাউজে কাউছার ও মহানবী (সা.)-এর হাউজের ওপর ঈমান। ১৭. শাফাআত ও মাকামে মাহমুদের ওপর ঈমান।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন