ভয়াবহ পানিসংকট, অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপ ও ভূমিধসের হুমকির কারণে রাজধানী তেহরান থেকে প্রশাসনিক কেন্দ্র সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। তাঁর ভাষায়, এ সিদ্ধান্ত আর বিকল্প নয়, বরং এখন বাধ্যবাধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার হরমোজগান প্রদেশ সফরে গিয়ে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান বলেন, ‘তেহরান, কারাজ ও কাজভিনসহ আশপাশের অঞ্চলে পানি সংকট চরমে পৌঁছেছে। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সমস্যা চললেও কার্যকর সমাধান হয়নি।’ তিনি জানান, রাজধানী স্থানান্তরের প্রস্তাব গত বছরই সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির কাছে তোলা হয়েছিল।
পানিসংকট মারাত্মক : যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, বর্তমানে তেহরানে ১ কোটির বেশি মানুষ বসবাস করে এবং শহরটি একাই ইরানের প্রায় এক-চতুর্থাংশ পানি ব্যবহার করে। অথচ রাজধানীর পানি সরবরাহ ভয়াবহভাবে কমে গেছে। সাধারণত ৭০ শতাংশ পানি আসে বাঁধ থেকে এবং ৩০ শতাংশ ভূগর্ভস্থ উৎস থেকে। কিন্তু বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় বাঁধগুলো দ্রুত অক্ষম হয়ে পড়ছে।
নতুন রাজধানীর পরিকল্পনা : পেজেশকিয়ানের মতে, নতুন রাজধানী দক্ষিণাঞ্চলের পারস্য উপসাগর তীরবর্তী এলাকায় হলে তা বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে নতুন গতি আনবে। তাঁর ভাষায়, ‘এ অঞ্চল উন্মুক্ত সমুদ্রের সরাসরি প্রবেশাধিকার দেয়, ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।’ -দ্য গার্ডিয়ান
এর আগে সাবেক প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানিসহ একাধিক নেতা রাজধানী সরানোর পরিকল্পনা নিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। তবে বর্তমান পানিসংকট ও ভূমিধসের ঝুঁকি ইরানকে এবার কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করছে।