‘সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন বন্ধ কর, না হলে ভৌগোলিক উপস্থিতি হারিয়ে ফেল’-ঠিক এ ভাষায়ই পাকিস্তানকে কড়া হুঁশিয়ারি ভারতের। দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেছেন, পাকিস্তান যদি মানচিত্রে তার স্থান ধরে রাখতে চায়, তাহলে সন্ত্রাসবাদ বন্ধ করতে হবে।
সন্ত্রাসবাদীদের প্রভুদের রাষ্ট্রীয় মদতদানের জন্য বারংবার ভারতের পশ্চিম পাড়ের এই প্রতিবেশী দেশটির দিকে অভিযোগ উঠেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল ভারতের রাজস্থানের অনুপগড়ে একটি সেনা চৌকিতে বক্তৃতা দিতে গিয়ে জেনারেল দ্বিবেদী এসব কথা বলেন। তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ‘ভারতীয় সেনাবাহিনী এবার আর কোনো সংযম দেখাবে না। এমনকি ইসলামাবাদ যদি সন্ত্রাস রপ্তানি বন্ধ করতে অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে ‘অপারেশন সিঁদুর’র দ্বিতীয় সংস্করণ খুব বেশি দূরে থাকবে না বলেও কার্যত ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন সেনাপ্রধান। জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেন, ‘অপারেশন সিঁদুর ১.০-তে আমরা যে সংযম দেখিয়েছিলাম, এবার আমরা তা বজায় রাখব না। এবার আমরা এমন কিছু করব, যা পাকিস্তানকে ভাবতে বাধ্য করবে যে তারা ইতিহাস বা ভূগোলে তাদের স্থান ধরে রাখতে চায় কি না।
জেনারেল দ্বিবেদীর এই হুঁশিয়ারির আগে এদিনই দিল্লিতে এক সম্মেলনে ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এপি সিং-এর দাবি করেছিলেন যে, গত মে মাসে অপারেশন সিঁদুরের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এফ-১৬ এবং চীনের তৈরি জেএফ-১৭-সহ চার থেকে পাঁচটি পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছিল। উল্লেখ্য, গত এপ্রিলে ভারতের জম্মু কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসবাদী হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর পরই পাল্টা সন্ত্রাসবাদ দমনে নামে ভারতীয় সেনাবাহিনী। ৭ মে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে ভারতীয় সেনাবাহিনী এক বিশেষ অভিযান চালিয়ে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে নয়টি জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করে দেয়। অপারেশন সিঁদুরের পরই দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সেই সংঘর্ষে দুপক্ষেরই ক্ষয়ক্ষতি হয়। যদিও পাকিস্তানের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণটা ছিল বেশি। এরই মধ্যে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর তরফে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে ফোন করে সংঘর্ষ বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করা হলে ১০ মে যুদ্ধবিরতি হয়। সেনাপ্রধান বলেন, অপারেশন সিঁদুরের সময় ভারত সিদ্ধান্ত নেয় যে কোনো সাধারণ মানুষের প্রাণের ক্ষতি করা হবে না এবং কোনো সামরিক লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করা হবে না। মূলত আমাদের লক্ষ্য ছিল সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং তাদের মূল পরিকল্পনাকারীদের নির্মূল করা। তিনি আরও বলেন, অপারেশন সিঁদুরের সময় ধ্বংস হওয়া সন্ত্রাসবাদীদের আস্তানা সম্পর্কে ভারত গোটা বিশ্বকে প্রমাণ উপস্থাপন করেছে। কারণ, ভারত যদি তা না করত তাহলে পাকিস্তান সত্য গোপন করত।