আবুধাবি আন্তর্জাতিক হান্টিং অ্যান্ড ইকুয়েস্ট্রিয়ান এক্সহিবিশনে উটের নিলামে সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে তৈরি হলো এক অনন্য দৃশ্য। মাত্র একটি বাছুর উটের দাম উঠলো পাঁচ লাখ দিরহাম- যা সবার চোখ কপালে তোলার মতো ঘটনা।
আধা মিলিয়ন দিরহামের বিনিময়ে মাত্র একটি বাছুর উটের মালিক হয়েছেন অভিজ্ঞ ক্রেতা মোহাম্মদ আল মেনহালি। তিনি শুরুর দিক থেকেই একের পর এক নিলামে সক্রিয় ছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত নাটকীয় প্রতিযোগিতায় জিতে নেন বাছুরটি।
তার বিপরীতে ছিলেন তরুণ প্রতিযোগী ও কবি মুবারক বিন বখেইত আল শামসি, যিনি ৪০ হাজার দিরহাম থেকে হঠাৎ এক লাখ দিরহামে লাফিয়ে ওঠেন এবং মুহূর্তেই নিলামের পরিবেশে উত্তেজনা ছড়িয়ে দেন। মেনহালি বলেন, শ্রেষ্ঠ জাতের উটের জন্যই সর্বোচ্চ দর ওঠে। দর যত যেত আমি ততই এগিয়ে যেতাম, কারণ এই জাতের প্রতি আমার আলাদা আগ্রহ।
তবে সোমবার রাতের নিলামে সবচেয়ে বেশি উট কিনেছেন মাত্র ১৪ বছর বয়সী হামদান আল কাবি। নবম শ্রেণির এই কিশোর কিনে নেন মোট চারটি উট। তার সঙ্গে ছিলেন চাচা হামাদ, ছোট দুই ভাই ও কয়েকজন বন্ধু।
হামদান আল কাবির চাচা হামাদ জানান, তাদের পরিবারের আল আইন ফার্মে বর্তমানে প্রায় ৮৫টি উট আছে। তারা ২০১৬ সাল থেকে উট প্রতিযোগিতা ও প্রশিক্ষণে যুক্ত। তার ভাষায়, প্রত্যেক নিলামেই আমরা সেরা জাত খুঁজি। আল মুন্থার, মজদ আর আল ঘারবি জাতের উট দ্রুতগতি ও শরীরের গঠনে আলাদা।
হামাদ নিজেই উটের প্রশিক্ষণ তদারক করেন। পিঠ, পা ও হাড়ের গঠন দেখে তিনি বুঝতে পারেন কোন উট প্রতিযোগিতায় ভালো করবে। নতুন উটগুলোকে প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রতিযোগিতায় নামানো হয়, আবার বিক্রিও করা হয়। তবে উটের দুধ বিক্রি না করে বিনামূল্যে বিলিয়ে দেওয়াকেই সম্মানের অংশ মনে করেন তারা।
তাদের পরিবারের এক স্মরণীয় ঘটনা হলো- হামদানের কেনা এক ‘জাফারানা’ বাছুর। তিন বছর সেটিকে বিক্রি বা প্রশিক্ষণ না দিয়ে পোষা প্রাণীর মতো রেখেছিলেন। পরে যখন দৌড়ে নামানো হয় আর প্রথম প্রতিযোগিতাতেই জয়ী হয় এবং অবশেষে ২০ লাখ দিরহামে বিক্রি হয়।
সোমবার রাতের এই নিলামে সর্বমোট ১৫টি উট বিক্রি হয়েছে, যার মূল্য দাঁড়িয়েছে প্রায় ১.৭৭ মিলিয়ন দিরহাম। এর মধ্যেই আধা মিলিয়ন দিরহামে বিক্রি হওয়া বাছুরটিই ছিল সবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। এই নিলামটি শুধু ব্যবসার ক্ষেত্রেই নয় বরং আরব অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী উট সংস্কৃতির মহিমাকেও নতুন করে তুলে ধরেছে।
তথ্য সূত্র- খালিজ টাইমস।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ