সরকারবিরোধী বিক্ষোভে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় ইন্দোনেশিয়ার সরকার দেশটির সংসদ সদস্যদের জন্য নির্ধারিত বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিক্ষোভকারীদের দাবির মুখে সংসদ সদস্যদের সুযোগসুবিধা বাতিলে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো। গতকাল ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেছেন, দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সংসদ সদস্যদের জন্য দেওয়া বেশ কিছু ভাতা ও বিশেষ সুবিধা কাটছাঁটে রাজি হয়েছে। দেশটিতে চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভে পাঁচজনের প্রাণহানির ঘটনার পর বিক্ষোভকারীদের দাবি অনুযায়ী এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সংসদ সদস্যদের অতিরিক্ত বেতন ও আবাসন ভাতার বিরুদ্ধে গত সোমবার থেকে দেশটিতে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়। বৃহস্পতিবার পুলিশের অভিযানে এক মোটরসাইকেল চালক নিহত হওয়ার পর বিক্ষোভ ভয়াবহ দাঙ্গায় রূপ নেয়। বিক্ষোভকারীরা দেশটির রাজনৈতিক দলের কয়েকজন নেতার বাড়ি এবং সরকারি স্থাপনায় হামলা চালান। এ সময় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করা হয়। সর্বশেষ শনিবার রাতে দেশটির অর্থমন্ত্রীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ব্যাপক লুটপাট করেন বিক্ষোভকারীরা।
গতকাল রাষ্ট্রপতি প্রাসাদে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন দেশটির রাষ্ট্রপতি প্রাবোও। এ সময় তিনি বলেন, সেনাবাহিনী ও পুলিশকে দাঙ্গাকারী ও লুটেরাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের কিছু কর্মকাণ্ডে ‘সন্ত্রাসবাদ’ ও ‘রাষ্ট্রদ্রোহের’ আলামত দেখা গেছে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।
প্রাবোও বলেন, সংসদের বেশ কিছু নীতি প্রত্যাহার করবেন বলেন সংসদীয় বিভিন্ন কমিটির নেতারা জানিয়েছেন। এর মধ্যে সংসদ সদস্যদের ভাতা হ্রাস ও বিদেশ সফর সাময়িক স্থগিতের মতো বিষয়ও রয়েছে। তিনি বলেন, আমি সরকারি স্থাপনা ধ্বংস, ব্যক্তিগত বাড়ি কিংবা অর্থনৈতিক কেন্দ্র লুটপাটের ঘটনা ঠেকাতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সেনাবাহিনী ও পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি।
গত বছরের অক্টোবরে ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রাবোওর সরকার তেমন কোনো রাজনৈতিক বিরোধিতার মুখে পড়েনি। চলমান এ আন্দোলনই এখন পর্যন্ত তার সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় পরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সূত্র : রয়টার্স।