সুদানের চলমান সহিংসতা দ্রুত শেষ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। একাধিক যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব কার্যকর না হওয়ায় সহিংসতার কারণে খাদ্য সংকট, বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ভয়াবহভাবে বাড়ছে।
সুদানের পরিস্থিতি 'ভয়াবহ' উল্লেখ করে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার বলেছেন, বর্তমান সুদান বিশ্বের দুর্ভোগের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।
মঙ্গলবার স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমি অনেক মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি, যারা আমাকে গণহত্যা, গণধর্ষণ ও যৌন সহিংসতার ভয়াবহ কাহিনি শুনিয়েছেন। যা সংঘাতের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিছু এলাকায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করা হয়েছে। আল ফাশির থেকে পালানোর পথে মানুষগুলো এমন অঞ্চলের মধ্য দিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে, যেখানে খাবার, পানি বা চিকিৎসা সেবা নেই।
টম ফ্লেচার জানিয়েছেন, মানুষরা তাকে পালানোর সময়ের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছে। তারা খাবার, পানি বা চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না। একজন নারী তার মৃত প্রতিবেশীর অপুষ্টির শিকার শিশুকে নিয়ে পালাচ্ছিলেন। পালানোর পথে তাকেও আক্রমণ করা হয়।
মানবাধিকারকর্মী ও বাস্তুচ্যুতরা জানিয়েছেন, আরএসএফ যোদ্ধারা বাড়িতে গিয়ে সাধারণ নাগরিকদের হত্যা করেছে। নারীদের ওপর যৌন সহিংসতা চালানো হচ্ছে।
২০২৩ সালে এপ্রিলে রাজধানী খার্তুমে দেশটির সেনাবাহিনী ও র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফের)-এর মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। এখন তা পুরো দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবিক সংস্থা জানিয়েছেন, যুদ্ধের কারণে কমপক্ষে ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ১২ মিলিয়ন মানুষ, তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
গত মাসে আরএসএফ উত্তর দারফুর রাজ্যের রাজধানী আল ফাশির দখল করেছে। জাতিসংঘ ও মানবিক সংস্থাগুলোর তথ্যানুযায়ী, এতে শতাধিক মানুষ মারা গেছেন, ১০ হাজারের বেশি মানুষ পালাতে বাধ্য হয়েছে।
সুদানের চলমান এ সহিংসতা দ্রুত শেষ হওয়ার আশা কম। দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল আব্দেল-ফাত্তাহ জানিয়েছেন, আরএসএফ সম্পূর্ণ ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত তার বাহিনী থামবে না।
আরএসএফ ও সুদানের সেনাবাহিনী একাধিক যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব গ্রহণ করলেও কোনোটি কার্যকর হয়নি।
সূত্র: স্কাই নিউজ
বিডি-প্রতিদিন/এমই