ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে একদিনে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছে প্রায় ১২০০ অভিবাসী। যা চলতি বছর এখন পর্যন্ত একদিনে এটিই সর্বোচ্চ সংখ্যক অভিবাসনপ্রত্যাশীর ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের ঘটনা ঘটেছে।
রবিবার (১ জুন) ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত শনিবার ১ হাজার ১৯৪ জন অভিবাসী ১৮টি ছোট নৌকায় করে দেশটিতে পৌঁছেছেন।
এ নিয়ে ২০২৫ সালে চ্যানেল পাড়ি দেওয়া অভিবাসীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪,৮১১ জনে, যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। যদিও ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য সরকার এই প্রবণতা থামাতে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে।
ফরাসি উপকূলীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুক্রবার রাত থেকে শনিবার রাত পর্যন্ত তারা প্রায় ২০০ অভিবাসীকে উদ্ধার করেছে।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হিলি এই সর্বশেষ আগমনকে ‘চমকে দেওয়ার মতো’ বলে উল্লেখ করেন। যদিও এটি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের সেই রেকর্ডের চেয়ে কম, যখন একদিনে ১,৩০০ অভিবাসী ছোট নৌকায় এসে পৌঁছেছিল।
তবে এই পরিস্থিতি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবৈধ অভিবাসন ইস্যুতে কড়া অবস্থান নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি, বিশেষ করে কট্টর ডানপন্থিদের চাপের মুখে অভিবাসীর সংখ্যা কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি রাখতে।
২০২২ সালে রেকর্ডসংখ্যক আগমনের পর ২০২৩ সালে কিছুটা কমে এলেও, আবারও ব্যাপকহারে চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার প্রবণতা দেখা গেছে। গত বছর ৩৬,৮০০ জন অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছে।
চলতি বছর এপ্রিলেই চ্যানেল পাড়ি দেওয়া অভিবাসীর সংখ্যা ১০,০০০ ছাড়িয়ে গেছে-যা ২০১৮ সালে রেকর্ড সংরক্ষণ শুরু হওয়ার পর সবচেয়ে আগেভাগেই এ মাইলফলক অতিক্রম।
চলতি মাসেই প্রধানমন্ত্রী স্টারমার নতুন ও কঠোর অভিবাসন নীতি ঘোষণা করেছেন। এতে অভিবাসীরা নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য হতে যত সময় লাগবে, তা দ্বিগুণ করা হয়েছে। পাশাপাশি বিদেশি অপরাধীদের বিতাড়নের ক্ষমতা আরও বাড়ানো হয়েছে।
এই পদক্ষেপগুলোকে কট্টর ডানপন্থী রিফর্ম পার্টির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি ঠেকাতে এবং ভোটারদের সমর্থন পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ফ্রান্স সরকারও উপকূলের কাছে পুলিশি অভিযান চালাতে সম্মত হয়েছে, যদিও কোনো নৌকা একবার যাত্রা শুরু করলে তাদের থামানোর অনুমতি নেই।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিলি স্কাই নিউজকে বলেন, ‘আমরা ফরাসিদের সঙ্গে এমন একটি চুক্তিতে পৌঁছেছি যাতে তারা কাজের ধরন পরিবর্তন করতে সম্মত হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এখন মনোযোগ হলো তাদের চাপে ফেলে এই পরিবর্তন কার্যকর করা।’
বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হিলি বলেন, ‘আমরা এখন ফরাসিদের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চাই, যাতে তারা জলে হস্তক্ষেপ করতে পারে, বিশেষ করে অগভীর পানিতে, যা তারা এখনো করে না।’
সরকারি তথ্যের ভিত্তিতে এএফপি জানায়, ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার সময় ১৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এটি বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত নৌপথ।
সূত্র : বিবিসি।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত