জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগাঁওকাণ্ডের জেরে সৃষ্ট ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা কমাতে পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও ছোট ভাই শেহবাজ শরিফকে কূটনৈতিক পথে হাঁটার পরামর্শ দিলেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ‘দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন’ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রবিবার নওয়াজের সঙ্গে দেখা করতে যান শেহবাজ। লাহোরে নিজের বাড়িতেই আছেন নওয়াজ। সেখানে তার সঙ্গে গিয়ে দেখা করেন শেহবাজ এবং পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ। সাক্ষাতে নওয়াজকে পেহেলগাঁওকাণ্ড পরবর্তী সময়ে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক ও দুই দেশের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনা বিষয়ে অবহিত করেন শেহবাজ। ভারতের বিরুদ্ধে কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি, সেই কথাও জানান তিনি। একই সঙ্গে যেকোনও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কীভাবে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানানো এবং সে ব্যাপারে প্রস্তুতী কী তাও নওয়াজকে অভিহিত করেন শেহবাজ।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ তার বড় ভাইকে জানান যে, পেহেলগাঁওকাণ্ড এই অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা তৈরির জন্য ভারতের আরেকটি মিথ্যা অভিযান। তিনি বলেন, ভারতের একতরফা আইডব্লিউটি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত এই অঞ্চলে যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, পাকিস্তান শান্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে জাতির নিরাপত্তা প্রশ্নে কোনও আপস করা হবে না।
এরপর নওয়াজ শরিফ তাকে পরিস্থিতি মোকাবেলায় কিছু পরামর্শ দেন। তিনি চান, দুটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে সব ধরনের কূটনৈতিক পন্থা ব্যবহার করা হোক।
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগাঁওয়ে হামলার ঘটনায় ২৬ জন নিহত হয়। ওই ঘটনায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হামলাকারীদের মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে ভারত। যদিও পাকিস্তান সেই অভিযৈাগ তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং দাবি করেছে যে, এটি ভারতের সাজানো নাটক।
তারপরও প্রতিবেশী দেশ পাকস্তানের বিরুদ্ধে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। পাকিস্তানিদের স্বল্পমেয়াদি ভিসা বাতিল করে দিয়েছে। সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে। পাকিস্তানও পাল্টা কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করেছে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের বেশ কয়েকজন নেতা-মন্ত্রী ভারত-বিরোধী মন্তব্য করেছেন। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ ভারতের দিকে আঙুল তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘দিল্লির প্রতিক্রিয়া আমাদের কাছে আশ্চর্যজনক নয়। ওই অঞ্চলে, বিশেষত আমাদের জন্য সমস্যা তৈরি করতেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।’’
পাকিস্তান সরকারের আরেক মন্ত্রী হানিফ আব্বাসি পরমাণু যুদ্ধের হুমকি দিয়েছেন ভারতকে। তিনি বলেন, ‘‘ওরা পানি বন্ধ করলে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকুক। আমাদের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সাজিয়ে রাখার জন্য নয়।’’
পাকিস্তানি নেতা বিলাওল ভুট্টো জারদারিও হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন, সিন্ধু নদীতে হয় আমাদের পানি বইবে নয়তো ওদের (ভারতীয়দের) রক্ত।” সূত্র: এক্সপ্রেস ট্রিবিউন
বিডি প্রতিদিন/একেএ