রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে প্রণীত ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ বাস্তবায়ন সুপারিশ আজ চূড়ান্ত হতে পারে। গতকাল এ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা ও নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা। এ ছাড়াও কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে সার্বিক বিষয়ে আলোচনা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতিনিধিদল। তারা কমিশনকে জানিয়েছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের কপি দেখে সনদে স্বাক্ষরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, নানা কৌশলে সনদের ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো গেলেও সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। আইনি ভিত্তির প্রশ্নে গণভোটের সিদ্ধান্তে একমত হলেও গণভোটের সময় ও পদ্ধতি নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি দলগুলো। এ অবস্থায় সনদের সঙ্গে পৃথক সুপারিশ আকারে সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি সংক্রান্ত প্রস্তাব সরকারকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায় কমিশন। কমিশনের সিদ্ধান্ত মেনে সংস্কার প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া ৩০টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৫টি দল স্বাক্ষর করলেও ৫টি দল স্বাক্ষর করেনি। কমিশনের পক্ষ থেকে ওই দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।
কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জাতীয় সংসদের এলডি হলে অনুষ্ঠিত এনসিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য কমিশন) মনির হায়দার। আর সদস্যসচিব আখতার হোসেনের নেতৃত্বে এনসিপি প্রতিনিধিদলে ছিলেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, জাবেদ রাসিন, খালেদ সাইফুল্লাহ এবং যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম মুসা।
কমিশন সূত্র জানায়, কমিশন সদস্যরা গতকাল বিকালে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন (সংবিধান সংস্কার) আদেশ-২০২৫’-এর খুঁটিনাটি নানা বিষয়ে আলোচনা করেন। বিশেষ করে সাংবিধানিক আদেশ জারি ও এরপর গণভোটের মাধ্যমে গৃহীত জুলাই সনদের বাস্তবায়ন কীভাবে নিশ্চিত করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করেন। এ ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির সাক্ষাৎ এবং সে আলোকে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া নির্দেশনা নিয়েও আলোচনা হয়। তবে আলোচনা শেষ না হওয়ায় আজ আবারও বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত হয়।