দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে একাধিক ডাকাতি ও চুরির ঘটনায় অভিযুক্ত কুখ্যাত ডাকাত সর্দার রাজীব হোসেন রাজুকে অবশেষে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিনব কৌশলে লুঙ্গি-গামছা পরে সাধারণ মানুষের ছদ্মবেশে অভিযান চালিয়ে তাকে ধরতে সক্ষম হন এএসআই সুজেল মিয়া।
রবিবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ অক্টোবর রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কদমপুর এলাকায় পানি শোধনাগার সংলগ্ন একটি প্লাস্টিক কারখানায় ডাকাতি চালান রাজীব ও তার সহযোগীরা। তারা শ্রমিকদের হাত-পা বেঁধে মারধর করেন এবং ১১ লাখ টাকার মালামাল ও মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে যান। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে পুলিশ তদন্তে নামে।
সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে রাজীবের অবস্থান শনাক্ত করা হলে এএসআই সুজেল মিয়ার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল কৌশল পরিবর্তন করে অভিযানে নামে। স্থানীয়দের সঙ্গে মিশে যেতে এএসআই সুজেল লুঙ্গি ও গামছা পরে টানা দুইদিন এলাকায় নজরদারি চালান। অবশেষে গতকাল রাতে করেরগাঁও এলাকায় একাধিক দেশীয় অস্ত্রসহ রাজীবকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের সময় রাজীব ছাদ থেকে লাফিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে এএসআই সুজেলও দুইতলা ভবনের ছাদ থেকে ঝাঁপ দেন। এতে তিনি আহত হলেও ধাওয়া দিয়ে রাজীবকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। পরে তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়।
এলাকাবাসী জানান, এএসআই সুজেল দুইদিন ধরে লুঙ্গি পরে এলাকায় ঘোরাফেরা করলেও কেউ বুঝতে পারেনি তিনি একজন পুলিশ কর্মকর্তা।
এএসআই সুজেল মিয়া বলেন, রাজীবকে ধরতে লুঙ্গি পরে দুইদিন এলাকায় ঘুরেছি। শেষ পর্যন্ত কৌশল কাজে এসেছে। সে যখন ছাদ থেকে লাফ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে, তখন আমি এক মুহূর্তও চিন্তা করিনি—আমিও ঝাঁপ দেই। আঘাত পেয়েছি, কিন্তু অপরাধী ধরা পড়লে সেই ব্যথাও গর্বে পরিণত হয়। দেশের জনগণের নিরাপত্তাই আমাদের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব।
থানার ওসি আক্তার হোসেন বলেন, রাজীব দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে আসছিল। তার বিরুদ্ধে ছিনতাই, ডাকাতি ও চুরির একাধিক মামলা রয়েছে। তাকে ধরতে আমরা অনেক দিন ধরেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলাম। এবার সফল হয়েছি। তার সহযোগীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
বিডি-প্রতিদিন/মাইনুল