দক্ষিণ কোরিয়ার একটি আদালত মিয়ং জে-ওয়ান নামে ৪৮ বছর বয়সী শিক্ষিকাকে ৮ বছরের কন্যাশিশু কিম হে-নুল হত্যা করার দায়ে আজীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। ঘটনাটি ফেব্রুয়ারিতে দেইজিয়ন-এর একটি শ্রেণিকক্ষে ঘটে এবং পুরো দেশকে স্তম্ভিত করেছিল।
প্রসিকিউটররা মিয়ং-এর জন্য ফাঁসির দাবিও করেছিলেন। নিহতের পরিবার কঠোর শাস্তি চেয়েছিল। মিয়ং আদালতে জানান, হত্যার সময় তার সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা দুর্বল ছিল, কারণ তিনি মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তদন্ত চলাকালীন তিনি কোনো অনুশোচনা প্রকাশ করেননি, তবে পরে দশকের পর দশক চিঠি জমা দিয়ে অনুশোচনার কথা জানান।
দেইজিয়ন শিক্ষা অফিস জানিয়েছে, মিয়ং ডিপ্রেশনের কারণে হত্যার আগে ছয় মাসের ছুটি চেয়েছিলেন। চিকিৎসকের পরামর্শে ২০ দিনের মধ্যে স্কুলে ফিরে এসে হত্যাকাণ্ড ঘটান। হত্যার দিনই তিনি একটি অস্ত্র কিনে স্কুলে নিয়ে এসেছিলেন এবং পরিকল্পনা করেছিলেন যে, নিজেকে ও একটি শিশুকে হত্যা করবেন।
কিম সেই দিন বাসে ওঠেনি জানিয়ে স্কুলে অনুপস্থিত হিসেবে রিপোর্ট করা হয়েছিল। স্কুল ভবনের দ্বিতীয় তলায় ছুরিকাঘাতে আহত অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়। হাসপাতালে নিলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। মিয়ংও আহত অবস্থায় শিশুর পাশে পাওয়া যায়; পুলিশ জানায়, তিনি নিজের শরীরে ছুরি দিয়ে আঘাত করেছেন এবং পরে হাসপাতালে সেলাই করা হয়।
ঘটনার পর দক্ষিণ কোরিয়ার নেতৃত্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছিল। আদালত মিয়ংকে ৩০ বছরের জন্য ইলেকট্রনিক অবস্থান ট্র্যাকিং ডিভাইস পরিধান করতে নির্দেশ দিয়েছেন। রায়ে বলা হয়েছে, “একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা হিসেবে অভিযুক্তের দায়িত্ব ছিল শিশুকে সুরক্ষা দেওয়ার, কিন্তু তিনি সেই নিরাপদ স্থানে এক শিশুকে সুরক্ষা না দিয়ে বীভৎস অপরাধ সংঘটিত করেছেন।”
বিডি প্রতিদিন/আশিক