চুয়াডাঙ্গায় বিষাক্ত মদ পান করে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে গত তিন দিনে মৃতের সংখ্যা হলো সাত। সোমবার বিকালে হায়াত আলী (৪০) নামে একজন মারা যান। বিষাক্ত মদ পানে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় মাদক বিক্রেতা সন্দেহে জুমাত আলী নামে একজনকে আটক করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
অন্যদিকে রবিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া লাল্টু ও ছমিরের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগের একটি প্রতিনিধিদল সোমবার অসুস্থদের খোঁজখবর নিতে ডিঙ্গেদহ এলাকায় যান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার ডিঙ্গেদহ এলাকার ১০/১২ জন শ্রমিক বিষাক্ত মদ পান করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ ঘটনায় গত শনিবার দু’জন ও রবিবার চারজনসহ মোট ছয়জন মারা যান। সোমবার আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে।
নিহত লাল্টু মিয়ার মা হালিমা বেগম বলেন, শনিবার দুপুরে ছেলেটা বাড়ি থেকে কাজে যায়। রবিবার সকালে বাড়ি এসে স্ত্রী রেহেনা খাতুনকে বলে তার ভালো লাগছে না। গোসল করিয়ে দিতে বলে। সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনবার গোসল করানোর পরেও সুস্থ হয়নি। বরং চোখে দেখতে অসুবিধার কথা জানায় লাল্টু। পরে হাসপাতালে নিলে মারা যান। এতে লাল্টুর দুই ছেলে এতিম হয়ে গেলো। তাদের দেখার কেউ থাকলো না।
চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতিনিধিদলের প্রধান সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমান বলেন, ডিঙ্গেদহ এলাকায় গেলে মদ পানে অসুস্থ কেউ তাদের সামনে আসেনি। তবে তিনি বলেন, অসুস্থদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেউ যেন আত্মগোপন না করে।
চুয়াডাঙ্গার শংকরচন্দ্র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মহিউল আলম সুজন বলেন, তিনি দীর্ঘদিন থেকে এই ইউনিয়নকে মাদকমুক্ত করার চেষ্টা করছেন, কিন্তু তা পারছেন না। তিনি বলেন, এ অঞ্চলে যারা মাদক বিক্রির সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনী পদক্ষেপ নেয়া দরকার।
চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) জামাল আল নাসের বলেন, মদ পানে সোমবার পর্যন্ত সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। ওই এলাকার এক মাদক কারবারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। সন্দেহভাজন হিসেবে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা বলেন, তথ্য গোপন করে যে চারজনের দাফন করা হয়েছে। তাদের বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত মেনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন