কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে প্রতিবছরের মতো এবারও অসহায় ও দরিদ্র মানুষের জন্য বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ও ছানি অপারেশন ক্যাম্পের আয়োজন করেছে আলাউদ্দিন আহমেদ ফাউন্ডেশন ও তহিরন নেছা হাসপাতাল।
রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় কুমারখালীর আলাউদ্দিন নগরে অবস্থিত তহিরন নেছা হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে শুরু হয় এ চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প।
আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর প্রায় ৪ হাজার মানুষকে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে, যার মধ্যে এক হাজার রোগীর ছানি অপারেশন সম্পন্ন করা হবে।
গত ২১ বছর ধরে এ ধরনের সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করছে হাসপাতালটি। এ সময়ের মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা সেবা পেয়েছেন এবং ১৫ হাজারেরও বেশি রোগীর ছানি অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে।
দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতাল চত্বরে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের উপচে পড়া ভিড়। অনেকে এসেছেন দূর-দূরান্ত থেকে। স্বেচ্ছাসেবকেরা তাদের দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন এবং খুলনার বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতাল থেকে আগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন।
চাপড়া ইউনিয়নের লাহিনীপাড়া গ্রামের ফরিদা খাতুন বলেন, ‘চোখে ছানি পড়েছে। আমরা গরিব মানুষ, বাইরে অপারেশন করাতে ২৫ হাজার টাকা চেয়েছে। ফ্রি শুনে এখানে এসেছি।’
সদকী ইউনিয়নের ঘাঁসখাল এলাকার ৭০ বছর বয়সী আব্দুর রহিম বলেন, ‘কয়েক বছর আগে এখান থেকে এক চোখের অপারেশন করিয়েছিলাম। এবার মাইকে শুনে অন্য চোখের জন্য এসেছি। ফ্রি সেবা পেয়ে খুব ভালো লাগছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা কাজী সাইফুল বলেন, ‘বাইরে ছানি অপারেশন করাতে ২০-২৫ হাজার টাকা লাগে, যা অনেকের সামর্থ্যের বাইরে। তহিরন নেছা হাসপাতালের এ উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।’
আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শিল্পপতি, সমাজসেবক ও শিক্ষানুরাগী আলাউদ্দিন আহমেদের উদ্যোগে ২০০৪ সাল থেকে খুলনা বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালের সহযোগিতায় শুরু হয় এ ক্যাম্প। স্থানীয় মানুষদের জন্য এটি এখন একটি নিয়মিত ও আস্থার জায়গা হয়ে উঠেছে।
২০২৫ সাল থেকে হাসপাতালটিতে চালু হওয়া আধুনিক ভিশন সেন্টারের মাধ্যমে নিয়মিত চোখের পরীক্ষা, ছানি রোগী বাছাই ও ফলোআপ সেবা চালু রয়েছে। নির্বাচিত রোগীদের নিরাপদ পরিবহনের মাধ্যমে খুলনা বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে অপারেশন করানো হয়।
তহিরন নেছা হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য, অর্থাভাবে কেউ যেন দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে না ফেলে। গেল ২১ বছরে ৫০ হাজারের বেশি মানুষকে বিনামূল্যে সেবা দিয়েছি, যার মধ্যে ১৫ হাজারের বেশি ছানি অপারেশন করা হয়েছে।’
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ