কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বাজারে কমেছে সবজির সরবরাহ। এতে কেজি প্রতি সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। সাথে দীর্ঘদিন নিম্নমুখী থাকা ফার্মের মুরগির ডিমের দামও কিছুটা বাড়তি। তবে ব্রয়লার মুরগির দাম না বাড়লেও সোনালি জাতের মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্ষায় কাঁচাবাজারে কমেছে সবজির যোগান। যার প্রভাব পড়েছে দামে। ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজির নিচে নেই কোন সবজি।
জানা গেছে, বগুড়ায় টানা বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে সবজির বাজারে। ফসলের ক্ষেত নষ্ট হওয়ার ফলেই কমেছে সরবরাহ। এদিকে চালের বাজারে নতুন করে দাম না বাড়লেও আগের উচ্চমূল্যই বিক্রি হচ্ছে। প্রায় দেড় মাস ধরে উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে চাল। বাজারে মোটা চালের দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। কাটারিভোগ ৭৫ থেকে ৭৮ টাকা কেজি। মিনিকেট চাল ৭০ থেকে ৭৫টাকা কেজি। নাজিরশাইল চাল আগে ৭৫ টাকায় বিক্রি হলেও কয়েক দফায় দাম বেড়ে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া ব্রয়লার মুরগির দামে খানিকটা স্থিতিশীলতা থাকলেও বেড়েছে সোনালি জাতের মুরগির দাম। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। তবে প্রতিকেজি সোনালি মুরগির দাম বেড়ে ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কয়েকদিন আগেও যা বিক্রি হয়েছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়। এদিকে ফার্মের মুরগির ডিমের দামও বেড়েছে। প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়। যা কয়েকদিন আগে ৪০ টাকার মধ্যে ছিল।
শুক্রবার বগুড়ার রাজাবাজার, ফতেহ আলী বাজার, কলোনী, খান্দার ও বকশি বাজারসহ বেশকিছু বাজার ঘুরে দেখা যায়, শুধুমাত্র আলু ছাড়া সব ধরনে সবজির দাম বাড়তি। হঠাৎ এমন পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন নি¤œ আয়ের খেটে খাওয়া মানুষরা। বাজারে প্রতি কেজি বেগুনের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। অথচ বৃষ্টির আগে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০টাকা কেজি। কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে ২০০ থেকে ২৪০টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। যা আগে ১৬০টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া শসার দাম বেড়ে ৬০ থেকে ৭০টাকা, পেঁয়াজের দাম বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে থেকে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। করলা ৬০ থেকে ৭০টাকা, আলু ২০টাকা, পটল ৬০টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০টাকা, ঢ়েঁড়স ৬০ টাকা, ঝিংগা ৬০টাকা, চিচিংগা ৬০টাকা, কচুর লতি ৬০টাকা, মিষ্টিুকুমড়া ৩০টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। দেশি আদা প্রতি কেজি ১২০ টাকা ও রসুন ১৬০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তবে বৃষ্টির প্রভাব থাকলেও কমেনি কোন মাছের দাম। বাড়তি দামেই সব ধরনের মাছ বিক্রি হতে দেখা যায়। দেড় থেকে দুই কেজি ওজনের রুই মাছ প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা, তিন কেজি ওজনের কাতল মাছ প্রতি কেজি ৪০০ টাকা, আড়াই কেজি ওজনের সিলভার কার্প মাছ ২২০ টাকায় বেচাকেনা হতে দেখা যায়। এছাড়া চিংড়ির কেজি ৮শ’ টাকা, টেংরা মাছ ৪০০ থেকে ৬০০, পাবদা আকারভেদে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে। বাজারে ইলিশ মাছের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও দাম বেশ চড়া। বগুড়ার বাজারে প্রতি কেজি ইলিশের সর্বনিম্ন দাম এক হাজার এবং সর্বোচ্চ ১৮শ’ টাকা পর্যন্ত।
সবজি ব্যবসায়ীরা বলছেন, কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিতে বাজারে সবজির সরবরাহ কমে গেছে। বৃষ্টির কারণে জমিতে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ফসল তুলতে না পারার কারণে এই সংকট তৈরি হয়েছে। আর চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ঘাটতির কারণে কোন কোন সবজির দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম