নাটোরে কোরবানির পশুর চামড়ার বাজারে ঠিকমতো দাম না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। চামড়া নিয়ে আড়তে এসে বিপাকে পড়েছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীসহ বিক্রি করতে আসা লোকেরা। গরুর চামড়ার দাম সরকার নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও ওই দামে বিক্রি করতে না পারায় অসন্তুষ্ট বিক্রেতারা। তবে আড়তদারদের দাবি, মান অনুযায়ী সরকার নির্ধারিত দামেই চামড়া কিনছেন তারা।
বাজারে গিয়ে দেখা যায়, শনিবার (৭ জুন) বিকেল থেকেই মৌসুমী ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন মাদ্রাসা থেকে শিক্ষকরা ভ্যান, ট্রলি, ইজিবাইক, পিকআপে করে নাটোর শহরের চক বৈদ্যনাথ এলাকার আড়তগুলোতে আনছেন চামড়া। বিকেল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মানভেদে গরুর চামড়া ৫০০-১০০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। তবে এবছর ঢাকার বাইরে গরুর চামড়ার সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ১৫০ টাকা।
রাজশাহী থেকে আসা রাজু আহমেদ নামে এক মৌসুমী ব্যবসায়ী বলেন, ছাগলের চামড়া ২৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত দামে আমরা বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ঘুরে কিনেছি, সেগুলো নাটোরের আড়তে এনে ৪০ টাকায় বিক্রি করেছি। পিস প্রতি ১০ টাকা লাভ হয়েছে। অন্যদিকে গরুর চামড়ার দাম কম। যেই দাম বলছে, সে দামে বিক্রি করলে লোকসান হবে।
নাটোরের সিংড়া থেকে আসা পুটিমারি মাদ্রাসার শিক্ষক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, সরকার নির্ধারিত রেটে এখানকার আড়তদারেরা চামড়া কিনছেন না। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। ষাঁড় গরুর চামড়া ৫০০-৬০০ টাকা আর গাভী গরুর চামড়ার দাম ২৫০- ৪০০ টাকা বলছে। এই দামে বিক্রি করলে যেই টাকা গাড়ি ভাড়া হবে, সেই টাকাই উঠবে না।
নাটোর চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপ সমিতির সহ-সভাপতি নাসিম খান বলেন, আমরা সরকারি দামেই চামড়া কেনা-বেচার চেষ্টা করছি। ঈদের দিনেই বাজারে ভালো বেচাকেনা হচ্ছে। চামড়ার মান অনুযায়ী সঠিক দামেই চামড়া কেনা হচ্ছে। তবে লবণের দাম হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় চামড়া কেনায় কিছুটা প্রভাব পড়ছে।
রওশন নামে আরেক আড়তদার বলেন, কিছু চামড়ায় লাম্পি স্কিন রোগ দেখা দেওয়ায় সে চামড়াগুলো কম দামে আমরা কিনছি। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর চামড়ার দাম ভালো রয়েছে। গরুর চামড়া ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা ও ছাগলের চামড়া ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত দামে আমরা কিনছি।
এদিকে বাজার মনিটরিং করতে সন্ধ্যায় চামড়ার আড়ত এলাকায় আসেন নাটোর জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রাশেদুল ইসলাম। তিনি বলেন, চামড়ার সরকার নির্ধারিত দাম ১১৫০ টাকা। আড়তে প্রচুর চামড়া বিক্রেতা ও ক্রেতার সমাগম ঘটেছে। তারা উৎসবমুখর পরিবেশে চামড়া কেনা-বেচা করছেন। জেলা প্রশাসন সার্বক্ষণিক চামড়া বাজার মনিটরিং করছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর আমরা পাইনি। সব ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে চলছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই