গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে কনের বাড়িতে অবরুদ্ধ বরপক্ষকে উদ্ধার করতে গিয়ে হামলার শিকার হয় সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ। এসময় ইট-পাটকেল ও লাঠির আঘাতে ভাঙচুর করা হয় পুলিশের গাড়ি। আত্মরক্ষায় পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেওয়া পুলিশকে উদ্ধার করে সেনাবাহিনী। এ ঘটনায় ৫৯ জন নামীয় ও অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
রবিবার (৬ এপ্রিল) সন্ধ্যাায় মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ। এর আগে, শনিবার (৫ এপ্রিল) রাতে পুলিশের ওপর আক্রমণ, সরকারি গাড়ি ভাঙচুর ও কাজে বাধা দেওয়াসহ আরও বেশ কিছু অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) দিবাগত রাতে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছাপড়হাটী ইউনিয়নের পশ্চিম ছাপড়হাটী হাজিপাড়া গ্রামের প্রবাসী দুখু মিয়ার মেয়ের সঙ্গে পাশের রামজীবন ইউনিয়নের আয়নাল হকের ছেলে সবুজ সরকারের (২৮) বিয়ে হয়।
ওই দিন বিয়ের আনুষ্ঠানিকতায় ‘গেটের টাকা’ ও পরে ‘ঠান্ডা ভাত’ ঘিরে কনে পক্ষ ও বর পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা, ধাক্কাধাক্কি ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে বরপক্ষের লোকজন একে একে ভাতের প্লেট ছুড়ে ফেলেন, ভাঙচুর করেন চেয়ার-টেবিল। এসময় কনের জ্যাঠা পরিস্থিতি শান্ত করতে গেলে বরপক্ষের একাংশ তাকে মাটিতে ফেলে মারধর করে।
স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে অধিকাংশ বরযাত্রী পালিয়ে যান, তবে বরসহ কয়েকজনকে অবরুদ্ধ করে রাখেন এলাকাবাসী। এ ঘটনার পরদিন শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দিবাগত রাতে অবরুদ্ধ থাকা লোকজনকে উদ্ধারে তাদের পরিবার সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে কনের বাড়িতে অবরুদ্ধ হওয়া বরপক্ষের লোকজনকে উদ্ধার করতে যায় ওসিসহ সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ। এতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
কনে পক্ষের লোকজন পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোঁড়ে। গাড়িতে লাঠি দিয়ে ভাঙচুর চালায় এবং পুলিশের ওপর হামলা চালায়। প্রাণ রক্ষায় পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয় ওসিসহ পুলিশ সদস্যরা।। পরে ওই বাড়িটিও ঘিরে ফেলে বিয়ে বাড়ি উত্তেজিত লোকজন। পরে পুলিশের খবরে অন্যান্য পুলিশ সদস্য ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে অবরুদ্ধ ওসিসহ অন্যান্যদের উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় গত শনিবার রাতে বিয়ে বাড়ির ৫৯ জন নামীয় ও ৫০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ।
এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার ওয়াজেদ হোসেন বলেন, ওসি সাহেবেরর ফোন পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং তাদেরকে উদ্ধার করি।
এ ব্যাপারে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হাকিম আজাদ বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ৫৯ জন নামীয় ও অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ