পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ও সামরিক শাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খান ১৫ মার্চ ১৯৭১ থেকে ঢাকায় সপ্তাহখানেক শেখ মুজিব ও তার হাইকমান্ডের সঙ্গে বিরাজমান ভয়াবহ সংকট এবং সমস্যা নিরসনে আলোচনা করেন। তার দৃঢ় প্রতীতি জন্মে যে, বাংলাদেশ আওয়ামী নেতৃত্ব স্বাধীনতার বিকল্প কিছুই মানবে না। ১ মার্চ থেকে অসহযোগ আন্দোলন ধীরে ধীরে সশস্ত্র রূপ পরিগ্রহ করছে। প্রতিজ্ঞায় উচ্চকিত স্লোগান ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর বাংলাদেশ স্বাধীন কর।’ বাংলাদেশ দ্রুত স্বাধীনতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনে পৃথক পতাকা, জাতীয় সংগীত এবং সর্বোপরি শেষপর্যায়ে কনফেডারেশনের দাবি তুলেছে। যা বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের পর্যায়ে উন্নীত করবে। এ অবস্থায় জেনারেল ইয়াহিয়া খান ২৫ মার্চ অপারেশন সার্চলাইটের মাধ্যমে ব্লু-প্রিন্ট অনুযায়ী মুক্তিকামী জনগণকে সমূলে নির্মূল করার লক্ষ্যে সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ প্রদান করেন। শুরু হয় জঘন্য হত্যাকাণ্ড। পাশাপাশি বাংলার জনগণ প্রতিরোধযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
১. ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭১। ধানমন্ডির বাসভবনে শেখ মুজিব চার যুবনেতা সিরাজুল আলম খান, শেখ মণি, আবদুর রাজ্জাক ও তোফায়েল আহমেদকে কলকাতার রাজেন্দ্র রোডের একটি ঠিকানা দিয়ে বলেন, ‘এ ঠিকানায় গেলেই তোমরা অস্ত্র, ট্রেনিং ও অন্যান্য সাহায্য-সহযোগিতা পাবে। যুবশক্তিকে নিয়ে তোমরা সশস্ত্র যুদ্ধ পরিচালনা করবে। তাজউদ্দীন প্রবাসী সরকারের দায়িত্ব নেবে। ওই প্রবাসী সরকার গঠিত হবে সৈয়দ নজরুল ইসলাম, এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীদের নিয়ে।’ শেখ সাহেব সত্তরের নির্বাচনের পর পরই এমপি চিত্তরঞ্জন সুতারকে ভারতে পাঠিয়েছিলেন। আরও পাঠান ডাক্তার আবু হেনাকে যিনি সিরাজগঞ্জ থেকে প্রাদেশিক আইনসভার সদস্য হয়েছিলেন।
২. ৩০ মার্চ ’৭১ তাজউদ্দীন আহমদ ও ব্যারিস্টার আমির-উল ইসলাম ভারত সীমান্ত অতিক্রমের সংবাদ পেয়ে পশ্চিম বাংলার বিএসএফ প্রধান গোলক মজুমদার তাদের সাদরে অভ্যর্থনা জানান। তাজউদ্দীন আহমদ সংক্ষিপ্তভাবে পাকিস্তানি বর্বর সেনাবাহিনীর নৃশংস আক্রমণের বর্ণনা দেন। একপর্যায়ে তিনি জাতীয় পরিষদের নির্বাচিত সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতাদের তালিকা তার হাতে তুলে দেন। বিকালে তাদের কলকাতা এয়ারপোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে বিএসএফের ডাইরেক্টর জেনারেল কে এফ রুস্তমজি দিল্লি থেকে এসেছিলেন। তার সঙ্গে তাজউদ্দীন আহমদ ও ব্যারিস্টার আমির-উল ইসলাম অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহের বিষয়ে আলোচনা করেন। রুস্তমজি তাদের বলেন, যেহেতু বিষয়টি উচ্চপর্যায়ের সেহেতু প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে আপনাদের দেখা করা বাঞ্ছনীয়। ১ এপ্রিল ১৯৭১ তাজউদ্দীন আহমদ ও ব্যারিস্টার আমির-উল ইসলাম বিএসএফের একটি পুরোনো সামরিক বিমানে দিল্লি গমন করেন।
৩. তাজউদ্দীন আহমদকে উদ্বিগ্ন করেছিল তিনি কি শুধু আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করবেন? এ প্রশ্নে দিল্লি অবস্থানরত এম আর সিদ্দিকী, সিরাজুল হক, আবদুর রাজ্জাক, রেহমান সোবহান ও আনিসুর রহমানের সঙ্গে আলোচনা করেন। একই সঙ্গে তিনি ভারতেও উচ্চপর্যায়ের সিভিল ব্যুরোক্র্যাটদের সঙ্গে মিলিত হন। ভারতের বিভিন্ন শহরে তখন বাংলাদেশের পক্ষে বিক্ষোভ, মিটিং-মিছিল এবং বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানের জোর দাবি উঠেছে। ভারতের উত্তরপ্রদেশ, বিহার, আসাম, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরাসহ বেশ কিছু প্রাদেশিক পরিষদে বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদানের জন্য প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী পিএন হাকসারের সঙ্গে আলোচনা করে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হন, আইনানুগ সরকার গঠিত না হলে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার কোনো আইনগত ও নৈতিক ভিত্তি ভারতের নেই।
৪. নয়াদিল্লি। ৩ এপ্রিল, ১৯৭১। প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী বাসভবনে বারান্দায় পায়চারি করছিলেন। জনাব তাজউদ্দীন আহমদ একাই দেখা করতে গেলেন। সাদরে অভ্যর্থনা জানিয়ে তাজউদ্দীন আহমদকে ভিতরে নিয়ে গেলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর প্রথম প্রশ্নটি ছিল, ‘হয়ার ইজ শেখ মুজিব’? তাজউদ্দীন আহমদ নিজেও জানতেন না শেখ মুজিব কোথায়! তার পরও অত্যন্ত কূটকৌশলে জবাব দিলেন, তাকে রাষ্ট্রপতি করে সরকার গঠিত হয়েছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছি। জনাব তাজউদ্দীন আহমদ যে আকস্মিকভাবে কথাটি বলেছেন এমনটি নয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য সরকার গঠন ছিল একটি অতি আবশ্যকীয় শর্ত। তাজউদ্দীন আহমদ শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে সরকার গঠনের বিষয়টি প্রকাশ করতে দ্বিধান্বিত ছিলেন না। পরিস্থিতি ছিল জটিল। হাজার হাজার শরণার্থী সীমান্ত পাড়ি দিচ্ছে। তাদের আশ্রয়, খাদ্য বলতে কিছু নেই। ছিন্নমূল মানুষেরা তাদের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করতে হন্যে হয়ে খুঁজছিল। তরুণরা এসেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার উন্মাদনা নিয়ে। তারা চায় অস্ত্র। চারদিকে এক জটিল অবস্থা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বিষয়গুলো অবগত থাকলেও তাজউদ্দীন আহমদ দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বাস্তব পরিস্থিতি তুলে ধরেন।
৫. কিন্তু কীভাবে সরকার গঠন হবে? ব্যারিস্টার আমির-উল ইসলামকে বিষয়টি অবহিত করলে তাঁর মানসপটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা ঘোষণার প্রেক্ষিতে সরকার গঠনের বিষয়টি উদিত হয়। কিন্তু কীভাবে সরকার গঠনের প্রাথমিক সনদ রচনা করা যায় তা ভাবতে গিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণাপত্রের আলোকে বাংলাদেশের সরকার গঠনের শাসনতান্ত্রিক ভিত্তি রচনা করেন। এ অবস্থায় ব্যারিস্টার আমির-উল ইসলাম দিল্লিতে উপস্থিত বুদ্ধিজীবী ও নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে স্বাধীনতার সনদপত্র রচনা করেন। ১০ এপ্রিল ঘোষিত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সর্বপ্রথম সাংবিধানিক দলিল ও ভিত্তি। বলা হয়ে থাকে, এই ঘোষণাপত্রটি ‘জেনেসিস অব দি কন্সটিটিউশন’। পৃথিবীতে মাত্র দুটো দেশ স্বাধীনতাসংগ্রামের পটভূমি, নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম এবং শাসকগোষ্ঠীর বর্বরোচিত আক্রমণের প্রেক্ষাপটে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা স্বাধীনতার সনদ আইনানুগভাবে ঘোষণা করেন।
৬. স্বাধীনতাকামী মার্কিনিদের মতো অনুরূপ ধারায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ। জনগণের একচ্ছত্র নির্বাচিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমান ধাপে ধাপে বাঙালি জাতিকে মুক্তির মন্ত্রে দীর্ঘ ২১ বছর ধরে উজ্জীবিত করেছিলেন। ছয় দফা জাতির সামনে উপস্থাপন করে নানা মাত্রিকতায় ও প্রজ্ঞাময় কৌশলে এক দফায় রূপান্তরিত করেন। স্বাধীনতার সন্ধিক্ষণে পাকিস্তান বর্বর সামরিক বাহিনী ২৫ মার্চ বাঙালি জাতিকে আক্রমণ করে, শেখ মুজিবের পক্ষে জিয়াউর রহমান চট্টগ্রাম থেকে রেডিওতে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। স্বাধীনতা ঘোষিত হলে স্বাধীনতাকে কার্যকর করার আবশ্যকীয় শর্ত- সরকার গঠন। কিন্তু সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় জনগণের কাছে তার অবর্তমানে সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, খন্দকার মোশতাক আহমদ, এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে ‘হাইকমান্ড’ হিসেবে শেখ সাহেব জাতির সামনে উপস্থিত করেছিলেন। ব্যারিস্টার আমির-উল ইসলাম কর্তৃক প্রণীত স্বাধীনতার সনদের ভিত্তিতে ১০ এপ্রিল এই হাইকমান্ড নিয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়।
৭. মার্কিন স্বাধীনতা ঘোষণাপত্র তেরো শ শব্দের একটি ঐতিহাসিক দলিল। দলিলে উল্লেখ করা হয়েছিল, স্বাধীনতাযুদ্ধের ঐতিহাসিক পটভূমি, জোরপূর্বক শাসন ও শোষণ, কর আদায়, অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক কারণ, বৈদেশিক নীতি এবং মানুষের অধিকারগুলো। ব্রিটেনের ক্রাউন প্রিন্স কর্তৃক মার্কিন নাগরিক এবং জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা গৃহীত অধিকার ও কল্যাণমূলক আইন অনুমোদন না করে তা বাতিল করেন। রাজনৈতিক অর্থনৈতিক শাসন-শোষণ নির্বিচারে চলতে থাকে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে মার্কিন জনগণ ১৭৭৬ সালের ৪ জুলাই স্বাধীনতা ঘোষণাপত্র জারি করে। চূড়ান্ত ঘোষণাপত্রটিতে সভাপতি হিসেবে স্বাক্ষর করেন জন হ্যানকুক। ১৩টি অঙ্গরাষ্ট্রের ৫৭ জন প্রতিনিধি এই ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছিলেন। ব্রিটেনের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করা হয়, কালাকানুন বাতিল করে নিজেরাই স্বাধীনভাবে দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর বিরুদ্ধে ব্রিটেন তাদের দমন করতে যুদ্ধঘোষণা ও রণতরি পাঠায়। ফ্রান্স ওই সময় মার্কিনিদের স্বাধীনতার পক্ষ নিয়ে ব্রিটেনের বিরুদ্ধে নৌ-ব্যারিকেড তৈরি করে। যুদ্ধের যাবতীয় উপকরণ দিয়ে যুদ্ধরত মার্কিন সরকারকে সহযোগিতা করে। বাংলাদেশের পাশর্^বর্তী দেশ ভারত যেমন ’৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করেছিল, অনুরূপভাবে ঘটনাসমূহের সঙ্গে তার মিল রয়েছে। মার্কিন স্বাধীনতা ঘোষণার মূল আদর্শ এভাবে বর্ণিত হয়েছে, ‘আমরা এই সত্যগুলোকে স্বয়ংসিদ্ধ বলে মনে করি, জন্মগতভাবে সকল মানুষ সমান এবং স্রষ্টা তাদের কতগুলো অবিচ্ছেদ্য অধিকার প্রদান করেছেন; এসব অধিকারের মধ্যে রয়েছে, বেঁচে থাকার অধিকার, স্বাধীনভাবে জীবনযাপনের অধিকার এবং সুখ অন্বেষণের অধিকার।’ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সনদে বলা হয়েছে, ‘যেহেতু বাংলাদেশের জনগণ তাহাদের বীরত্ব, সাহসিকতা ও বিপ্লবী উদ্দীপনার মাধ্যমে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের উপর তাহাদের কার্যকর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করিয়াছে, সেহেতু আমরা বাংলাদেশের নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী জনগণ কর্তৃক আমাদিগকে প্রদত্ত কর্তৃত্বের মর্যাদা রক্ষার্থে, নিজেদের সমন্বয়ে যথাযথভাবে একটি গণপরিষদের গঠন করিলাম এবং পারস্পরিক আলোচনা করিয়া এবং বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করণার্থে, সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্ররূপে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা করিলাম এবং তদ্বারা... শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ইতোপূর্বে ঘোষিত স্বাধীনতা দৃঢ়ভাবে সমর্থন ও অনুমোদন করিলাম।’
৮. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো বাংলাদেশেও পূর্বাপর গণ-আন্দোলনে এবং মুক্তিযুদ্ধে ছাত্র-যুবক, তরুণ সমাজ সংগ্রামে ও জনযুদ্ধের অগ্রভাগে ছিলেন। স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন, ৭ই মার্চ ভাষণ, জাতীয় সংগীত, জয়বাংলা বাহিনীর মার্চপাস্ট সমগ্র দেশে স্বাধীনতার প্রেরণাকে দৃঢ় ও উজ্জীবিত করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মি. ওটিস, অ্যাডামস, উইলসন, জেফারসন, ম্যাডিসন, থমাস টন, উইলিয়াম হফার প্রমুখ তরুণ নেতা স্বাধীনতা-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন। মার্কিন স্বাধীনতাযুদ্ধে সামরিক বাহিনী, মিলিশিয়া, সাধারণ কৃষক, শ্রমিক ও যুবকদের নিয়ে গঠিত হয়েছিল। কর্নেল জর্জ ওয়াশিংটনকে এ যুদ্ধের সেনাপ্রধান করা হয়, যেমন বাংলাদেশেও কর্নেল ওসমানীকে। দুজনই ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত। মার্কিন দলিলে যেসব নির্বাচিত নেতা স্বাক্ষর করেছেন তারা ‘ফাউন্ডার ফাদার’ হিসেবে সম্মানিত।
৯. ১৭ এপ্রিল ১৯৭১, বাংলাদেশের ভূখণ্ড মেহেরপুরে বাংলাদেশ সরকার শপথ গ্রহণ করে মুক্তিকামী জনগণকে সামনে রেখে। শপথবাক্য পাঠ করান অধ্যাপক ইউসুফ আলী। উপস্থিত ছিলাম আমরা কতিপয় এমএনএ ও এমপি-এ। ব্যাপকভাবে দেশিবিদেশি মিডিয়াকর্মীদের উপস্থিতি ছিল তাৎপর্যপূর্ণ। বাংলাদেশের মাটিতে সরকারের শপথ গ্রহণ বিশ্বব্যাপী প্রচারিত হলো। শুরু হলো মরণপণ মুক্তিযুদ্ধ। কোটি কোটি মানুষের আত্মত্যাগ, বীরোচিত আত্মাহুতি, ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির মাধ্যমে ৯ মাসে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে ১০ এপ্রিল স্বাধীনতা সনদের ঘোষণা চিরদিন অমøান হয়ে থাকবে।
লেখক : ’৭২ সালের খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী, লেখক ও গবেষক