ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের মেঘনা নদী থেকে অবাধে বালু তোলা চলছে। চরলাপাং, মানিকনগর, সাহেবনগরসহ আশপাশে রাতদিন শতাধিক খননযন্ত্র দিয়ে নদী থেকে বালু তোলা হচ্ছে। এতে এসব এলাকার ফসলি জমি, মসজিদ-মাদরাসা ও শত শত ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। এদিকে রবিবার বিকালে সোনারগাঁও থেকে সলিমগঞ্জের গণিশাহ মাজারে ওরসে অংশ নিতে যাওয়া একটি ট্রলার দড়াভাঙ্গা এলাকায় পৌঁছলে বালুবোঝাই বুলডোজারের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবে প্রাণ হারান আশরাফ উদ্দিন (৪৪) নামে এক ব্যক্তি।
স্থানীয়রা জানান, এখানে বালু তোলায় জড়িত রয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শতাধিক প্রভাবশালী নেতা-কর্মী। চলতি বছর ইজারা পেয়েছে উপজেলার সাহেবনগরের শাখাওয়াত হোসেনের প্রতিষ্ঠান মেসার্স সামিউল ট্রেডার্স। এসব বালু মহল ঘিরে চলে সশস্ত্র পাহারা। কেউ প্রতিবাদ করলেই জীবন হুমকির মুখে। অভিযোগ অস্বীকার করে ইজারাদার শাখাওয়াত হোসেন দাবি করেন, সরকারি নিয়ম মেনেই কাজ করছি। অস্ত্র মহড়া বা রাতে বালু উত্তোলনের অভিযোগ সঠিক নয়। প্রশাসনকেও বলেছি, রাতে কোনো ড্রেজার চললে জব্দ করতে। উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা মেহেদি হাসান বলেন, এখনই যদি বালু উত্তোলন বন্ধ না করা হয় তাহলে চরলাপাং, মানিকনগরসহ আশপাশের গ্রাম মানচিত্র থেকে মুছে যাবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজীব চৌধুরী জানান, তার কাছে বালুমহলে অবৈধ কর্মকাণ্ড সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে বালুমহলে অভিযান পরিচালনা জটিল। কারণ, সেখানে মাঝে মাঝে গোলাগুলোর ঘটনা ঘটে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম জানান, নিয়মনীতি মেনেই বালুমহলের ইজারা দেওয়া হয়েছে। বালুমহলের লোকজন কোনো নিয়ম ভঙ্গ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।