স্বর্ণালংকার লুট করার জন্যই নওগাঁর পোরশা উপজেলার পোরশা পূর্ববাড়ি গ্রামে ভাই-বোনকে হত্যার করা হয় বলে আদালতে নুরুন্নবী নামে এক আসামি স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। নুরুন্নবী হত্যার শিকার রেজিয়া খাতুনের পাতানো ছেলে। নওগাঁর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১১-এর বিচারক আবদুর রহমান ১৬৪ ধারায় গতকাল তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পোরশা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বেটুয়া পশ্চিপাড়ার একটি ফার্নিচারের দোকান থেকে সোমবার নুরুন্নবীকে গ্রেপ্তার করে পোরশা থানা পুলিশ। তার কাছ থেকে লুট করা স্বর্ণালংকার বিক্রির ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে।
পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, নুরুন্নবী পোরশা উপজেলার বানমহন গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে। তিনি পোরশা সদরের গবিরাকুড়ি গ্রামে বিয়ে করে প্রায় এক যুগ ধরে ঘরজামাই হিসেবে বসবাস করে আসছিলেন। পূর্ববাড়ি গ্রামের নূর মোহাম্মদের বাড়িতে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। বাড়ির মালিক নূর মোহাম্মদের বোন রেজিয়া খাতুন (৫৮) স্বামী পরিত্যক্তা। কোনো সন্তান না থাকায় ওই বাড়িতেই থাকতেন। নিজের কোনো সন্তান না থাকায় নুরুন্নবীকে ধর্ম ছেলে (পাতানো ছেলে) বানান রেজিয়া।
এ কারণে নূর মোহাম্মদের বাড়িতে যাতায়াত ছিল নুরুন্নবীর। রেজিয়ার কাছে বেশকিছু স্বর্ণালংকার দেখে লোভে পড়েন তিনি। গত ৪ এপ্রিল নুরুন্নবীকে রাতের খাবার খাওয়ার জন্য দাওয়াত দেন রেজিয়া। সন্ধ্যায় রেজিয়ার বাসায় যান নুরুন্নবী। রাতের খাবার শেষে রেজিয়া, নূর মোহাম্মদ ও নুরুন্নবী একসঙ্গে বসে গল্প করেন। একপর্যায়ে নূর মোহাম্মদ তার ঘরে গিয়ে ঘুমান। রাত ১১টার দিকে নুরুন্নবী গল্প করার ছলে পেছন থেকে রশি দিয়ে রেজিয়ার গলা প্যাঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে নূর মোহাম্মাদের ঘরে গিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় মুখ চেপে ধরে বুকে উপর্যুপরি চাকু দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেন। ভাই-বোনকে হত্যার পর ঘরে থাকা প্রায় দুই ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার নিয়ে যান নুরুন্নবী। তিন দিন পর ৭ এপ্রিল অর্ধগলিত অবস্থায় তাদের লাশ উদ্ধার করে পোরশা থানা পুলিশ। এ ঘটনায় রেজিয়া ও নূর মোহাম্মদের বড় ভাই ফজলে আহম্মদ বাদী হয়ে পোরশা থানায় হত্যা মামলা করেন।