অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চট্টগ্রাম আসছেন আজ। সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম নিজ জেলা চট্টগ্রাম আসছেন। তিনি দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠানসহ দিনভর তাঁর বেশ কটি কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার সফরসূচি অনুসারে, তিনি সকালে চট্টগ্রাম পৌঁছার পর বন্দরের অভ্যন্তরে এনসিটি-৫ প্রাঙ্গণে এক সভায় যোগ দেবেন। সেখানে বন্দর ও জাহাজ চলাচল খাতের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বন্দর ব্যবহারকারীসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি ও বাণিজ্য সংস্থার নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, সকাল ৯টার দিকে হবে এই মতবিনিময় সভা। প্রধান উপদেষ্টা বন্দর থেকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে যাবেন। সেখানে তিনি কর্ণফুলী নদীর ওপর কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন করবেন। চট্টগ্রাম নগরীর সঙ্গে বোয়ালখালী ও পটিয়া উপজেলার একাংশের যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হবে এ কালুরঘাট সেতু। সর্বশেষ একনেক সভায় সেতুটি নির্মাণের জন্য ১১ হাজার ৫৬০ কোটি টাকার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ৪ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে সরকার, আর বাকি ৭ হাজার ১২৫ কোটি টাকা আসবে কোরিয়ার ঋণ থেকে। দীর্ঘদিন ধরে বোয়ালখালীবাসী এ সেতুর দাবি জানিয়ে আসছিলেন। প্রধান উপদেষ্টার ব্যস্ততার কারণে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের জমির কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করবেন। দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হবে পঞ্চম সমাবর্তন। প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তৃতা দেবেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দারিদ্র্যবিমোচন ও বিশ্ব শান্তিতে অসামান্য অবদানের জন্য এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের একসময়ের নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ডি লিট ডিগ্রি দেওয়া হবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেশের এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় সমাবর্তন হবে এটি। অংশ নিচ্ছেন ২৩ হাজার সাবেক শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, সমাবর্তন শেষে প্রধান উপদেষ্টা চবি অর্থনীতি বিভাগ ঘুরে দেখবেন এবং পৈতৃক বাড়ি হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের বাথুয়া গ্রামে কিছুক্ষণ সময় কাটাবেন।
এদিকে ড. ইউনূসের চট্টগ্রাম সফর উপলক্ষে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ জানান, নিরাপত্তায় নিয়োজিত সব পুলিশ সদস্যকে সর্বোচ্চ সততা, পেশাদারি ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।