উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারে ডেনিম পোশাকের উৎপাদন বাড়াতে চায় উদ্যোক্তারা। নতুন প্রযুক্তির ব্যবহারে গতানুগতিকের তুলনায় উৎপাদন খরচও কমবে বলে জানিয়েছেন তারা। গতকাল রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবিতে) শেষ হওয়া বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোতে ১৮তম আসরে অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তারা এ কথা বলেন।
উন্নত প্রযুক্তির ডেনিম পোশাক প্রদর্শনীর জন্য প্রতি বছর ডেনিম প্রদর্শনীর আয়োজন করে থাকে বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জ (বিএই)। এবারের প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ ছাড়া বিশ্বের ১২ দেশের ৫৭টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, চীন, তুরস্ক, স্পেন, ইতালি, ভিয়েতনাম, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্র।
ডেনিম প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের উদ্ভাবিত ও উৎপাদিত বস্ত্র, তৈরি পোশাক, সুতা, যন্ত্র, উৎপাদনে ব্যবহৃত সরঞ্জাম ও উপকরণ প্রদর্শন করে। এতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ডেনিমপ্রেমী, উৎপাদনকারী, ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, ফ্যাশন ডিজাইনার, ডেনিম শিল্পের টেকসই ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করেন, এমন বিশেষজ্ঞরা আসেন। প্রদর্শনীতে শিক্ষামূলক কর্মশালা ও প্রযুক্তিনির্ভর সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
এবারের প্রদর্শনীতে ওয়াশিং প্রক্রিয়ার দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশের ডেনিম শিল্পের অগ্রগতি ও বাংলাদেশি ডেনিম ট্রেসেবিলিটির প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। প্রদর্শনীতে একটি ‘ফ্যাশন ট্রেন্ড জোন’ আয়োজন করা হয়। যেখানে বাংলাদেশে উদ্ভাবিত উন্নতমানের ডেনিম ও বিশেষ কাপড় প্রদর্শন করা হয়। যা দেশের প্রযুক্তিগত সক্ষমতার একটি উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়। বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মোস্তাফিজ উদ্দিন বলেন, গত ডেনিম এক্সপোতে এলডিসি উত্তরণ নিয়ে প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা শিল্পের সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় এবারের এক্সপোতে সব আলোচনা দক্ষতা, উদ্ভাবন ও প্রস্তুতির বিষয়টি মাথায় রেখে আয়োজন করা হয়েছে। এবারের আয়োজনের মূল বার্তা হলো পরিকল্পনা থেকে বাস্তবায়নের দিকে অগ্রসর হওয়া। যার মাধ্যমে ২০২৯ এবং পরবর্তী সময়ের জন্য শিল্পকে প্রস্তুত করা হবে।
প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে সিম গ্রুপের আজলান ডেনিম লিমিটেড। নারায়ণগঞ্জের গাউছিয়া এলাকায় আজলানের কারখানায় মাসে ১৫ লাখ গজ ডেনিম কাপড় উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। ভালো ক্রয়াদেশ থাকায় কারখানা সম্প্রসারণ করছে প্রতিষ্ঠান। প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে আগামী জুলাইয়ে তাদের উৎপাদন সক্ষমতা বেড়ে দাঁড়াবে ২৫ লাখ গজ।
আজলান ডেনিমের নির্বাহী পরিচালক (বিপণন ও বিক্রয়) সানাউল হক বলেন, ‘ক্রয়াদেশ ভালো। সে জন্য আমরা ডেনিম কারখানার সম্প্রসারণ করছি। প্রদর্শনীতে আসার কারণ হলো আমরা কী ধরনের কাপড় উৎপাদন করছি, তা প্রদর্শনীতে ক্রেতাদের সামনে তুলে ধরছি। পাশাপাশি অন্যরা কী ধরনের পণ্য উৎপাদন করছে, সেগুলোও আমরা দেখছি।
আরগন ডেনিমের ব্যবস্থাপক ইয়াসিন আল ফয়সাল বলেন, টেকসই উপকরণে তৈরি পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। গতানুগতিক পণ্যের চেয়ে টেকসই উপকরণে তৈরি পণ্যের দাম একটু বেশি হয়।