দিনদিন অপরাধের অভয়ারণ্যে পরিণত হচ্ছে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন। প্রতিদিনই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। শুধু তাই নয়, স্টেশনের আশপাশের এলাকা ঘিরে গড়ে উঠেছে মাদকবাণিজ্যের সিন্ডিকেটও। যার কারণে দিন দিন যাত্রীদের অনিরাপদ হয়ে উঠছে এ স্টেশনটি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ছিনতাই ও মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এরপরও তারা জামিনে বের হয়ে ফের জড়িয়ে পড়ছে ছিনতাই ও মাদকের মতো অপরাধে। ফলে কোনোভাবেই তাদের দমানো যাচ্ছে না।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, রেলওয়ে স্টেশনের বাইরে মাদক ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এসব এলাকা রেলওয়ে পুলিশের অধীনে নয়। রেলওয়ে পুলিশের আওতায় রয়েছে প্ল্যাটফর্মের ভিতরে, যেখানে ট্রেন থামে। এখানে কোনো ছিনতাই বা মাদক চক্র সক্রিয় হতে পারে না। আমরা সর্বোচ্চ নজরদারির মধ্যে রাখি সব সময়। তিনি বলেন, রেলওয়ে স্টেশনের পার্কিং এলাকা সিএমপির অধীনে। ওই এলাকাসহ আশপাশে ছিনতাই ও মাদক কারবার চলে। সেখানে আমাদের নিয়ন্ত্রণ না থাকার কারণে আমরা আইনি ব্যবস্থা নিতে পারি না। এ ছাড়া কদমতলী এলাকায় যাত্রী ওঠা-নামার সময় এ ধরনের কিছু ঘটনা ঘটে।
দীর্ঘদিন খোঁজখবর নিয়ে ও সরেজমিন জানা যায়, চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ঘিরে মাদক ও ছিনতাইয়ে সক্রিয় রয়েছে অন্তত ১৫টি সিন্ডিকেট। এসব চক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছে মো. ফারুক ওরফে ধামা ফারুক, সোহেল ওরফে কালু, ইসমাঈল, আকাশ, কবির হোসেন, তারেক, পিন্টু, আরজু, আতিক, সোহেল, শাহীন ও সজীব। এ ছাড়া পুরাতন স্টেশনের ৭ নম্বর পার্কিং এলাকায় শিখার জামাই খোকন, জামালের বউ (জানি), রাজীব দাশ, মরিয়ম, রাজু, সাগর ওরফে চোরা সাগর, মাহিন, স্বপন, জামাই ইব্রাহিম, শরিফুল ইসলাম ওরফে ন্যাড়া শরিফ। চিহ্নিত ছিনতাইকারীদের মধ্যে ফারুক বাবুল, বালুর মাঠের জাহিদ, বিআরটিসির আলতাফ, মুন্না ও কালু। এ চক্রের নেতৃত্বে স্টেশন ও আশপাশের এলাকায় চলছে রমরমা মাদকবাণিজ্য ও ছিনতাইয়ের ঘটনা। এসব ঘটনায় গত দুই মাসে রেলওয়ে পুলিশ ছিনতাইয়ের ঘটনায় চারটি ও মাদকের ঘটনায় ১৭টি মামলা দায়ের করেছে। মামলায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হলেও জামিনে বেরিয়ে ফের জড়িয়ে পড়ছে অপরাধে। এ ছাড়া গত বছরের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চার মাসে চট্টগ্রামের রেলওয়ে থানায় মাদকের মামলা হয়েছে ২৬টি এবং গ্রেপ্তার হয়েছে ২৩ জন। ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে ১২ হাজার ৩৮০ পিস, গাঁজা ৪৪ কেজি।