সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রাজ্জাক, তার স্ত্রী ও ছেলের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের নামে প্রায় ৩ কোটি ৩৬ লাখ ৫৬ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়ায় পৃথক সম্পদ বিবরণীর নোটিস পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। দুদক জানায়, আবদুর রাজ্জাকের নামে স্থাবর ও অস্থাবরসহ মোট ৬ কোটি ৭২ লাখ ৩৭ হাজার ২৯০ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে।
এ সম্পদ অর্জনের বিপরীতে তার বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয়ের উৎস পাওয়া যায় ৪ কোটি ৭৭ লাখ ৬৪ হাজার ৯১৬ টাকা। তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৯৪ লাখ ৭২ হাজার ৩৭৪ টাকা, যা প্রাথমিকভাবে দুদকে প্রমাণিত হয়েছে। এ বিষয়ে রেকর্ডপত্র ও জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। এ ছাড়া তিনি আয়কর রিটার্নেও প্রায় ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকার সম্পদের যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। অন্যদিকে আবদুর রাজ্জাকের স্ত্রী শিরিন আক্তার বানুর নামে ২ কোটি ৭৭ লাখ ৩০ হাজার ৫১১ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া গেছে। একই সময়ে তার পারিবারিক ব্যয় ছিল ৫১ লাখ ২৬ হাজার ৯৯১ টাকা। সবমিলিয়ে মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ কোটি ২৮ লাখ ৫৭ হাজার ৫০২ টাকা। কিন্তু বৈধ আয়ের উৎস পাওয়া যায় মাত্র ২ কোটি ৩৭ লাখ ৮৫ হাজার ৬১২ টাকা। ফলে তার বিরুদ্ধে ৯০ লাখ ৭১ হাজার ৮৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে দুদক মনে করে। যার মধ্যে ২০০৮-২০০৯ করবর্ষ থেকে ২০২৪-২০২৫ করবর্ষ পর্যন্ত আয়কর রিটার্নে অন্যান্য উৎস থেকে ৩৮ লাখ ২০ হাজার ৮৮২ টাকা এবং সিকিউরিটি মুনাফা বাবদ ১৯ লাখ ৯৮ হাজার ৬৯০ টাকার তথ্য রয়েছে।
একই সঙ্গে আবদুর রাজ্জাকের ছেলে রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিতের নামে ১ কোটি ২১ লাখ ৬৯ হাজার ৯৮২ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া গেছে। ব্যয়সহ সবমিলিয়ে মোট সম্পদ ১ কোটি ২৪ লাখ ৮১ হাজার ৮৩ টাকা। কিন্তু বৈধ আয়ের উৎস পাওয়া যায় মাত্র ৭৩ লাখ ৬৮ হাজার ৯৮৩ টাকা। ফলে তার বিরুদ্ধে ৫১ লাখ ১২ হাজার ১০০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তারা জানান, রাজ্জাক পরিবারের সম্পদগুলো বৈধ আয়ের উৎসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।