চট্টগ্রাম নগরের সড়কগুলো বর্ষায় প্রতি বছরই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে এ বছর গত পাঁচ বছরের তুলনায় সর্বোচ্চ বেশি সংখ্যক ও দৈর্ঘ্যরে সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) এসব সড়ক সংস্কারে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা চেয়েছে। এ নিয়ে গত সপ্তাহে চসিক মেয়র একটি চিঠিও দেন। চসিকের প্রকৗশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বর্ষা মৌসুমে নগরের ৩৮৮টি সড়কের ১৪২ দশমিক ২৮১ কিমি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গত বছর ২০২৪ সালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ১০০ কিলোমিটার, ২০২৩ সালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ৫০ কিমি, ২০২২ সালে ১০০ কিমি ও ২০২১ সালে ৩৬ কিমি। একই সঙ্গে এ বছর নগরের ঝুঁকিপূর্ণ ও অরক্ষিত নালা-খালের তালিকাও করেছে। তালিকা মতে, ক্ষতিগ্রস্ত ১৪২ কিমি সড়ক সংস্কারে প্রয়োজন হবে ৪২৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, ১৮ হাজার ৬৬৩ বর্গমিটার স্ল্যাব সংস্কার করতে লাগবে ৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, ২১ কিমি অরক্ষিত নালা-খালে নিরাপত্তাবেষ্টনী দিতে লাগবে ২১ কোটি ২৯ লাখ টাকা। চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘এবারের বর্ষায় চট্টগ্রামে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির ফলে নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, সেতু ও কালভার্ট মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চট্টগ্রাম দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী ও বন্দর। এখানে প্রতিদিন নগরের রাস্তাগুলোতে বন্দরের লরি, ট্রাক ও বিভিন্ন সেবা সরবরাহমূলক সংস্থার গাড়ি চলাচল করে। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সংস্কারে চসিকের আর্থিক অপ্রতুলতার কারণে এসব জরুরি কাজ করা সম্ভব নয়। এসব কাজে চসিকের ৫০০ কোটি টাকার বেশি অতিরিক্ত ব্যয় হবে। কিন্তু চসিকের আর্থিক এ সক্ষমতা অপ্রতুল। এ জন্য বিশেষ আর্থিক বরাদ্দ প্রয়োজন।’
চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম বলেন, এবার বৃষ্টিতে নগরের ১৪২ কিমি সড়ক ভেঙেছে। তাছাড়া, ঝুঁকিপূর্ণ নালা ও খালেও নিরাপত্তাবেষ্টনী দেওয়া জরুরি। এসব কাজে সরকার থেকে বরাদ্দ দিতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সরকারি বরাদ্দ পেলে রাস্তার সংস্কারকাজ ও নিরাপত্তাবেষ্টনী দেওয়ার কাজ দ্রুত করা শুরু করা হবে। তবে চসিক সড়ক সংস্কারে নিয়মিতই রুটিন কাজ চলমান রেখেছে। তিনি বলেন, বিটুমিনের শত্রু পানি। বিটুমিনের সড়ক নষ্ট হওয়ার প্রধান কারণ পানি। কোনো কারণে সড়কে পানি জমে থাকলে এবং সড়কের ওপর দিয়ে ভারী গাড়ি চলাচল করলে সড়ক দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। জানা যায়, বর্তমানে নগরে পিচঢালা সড়ক আছে ৯২০ কিমি দৈর্ঘ্যরে ১ হাজার ৪৫০টি। এসব সড়কের গড় প্রস্থ ৭ দশমিক ২ মিটার। এর মধ্যে আছে ১ হাজার ৫০০টি কংক্রিটের সড়ক। ৪০০ কিমি দৈর্ঘ্যরে এসব সড়কের গড় প্রস্থ ৩ দশমিক ৬৬ মিটার। এর বাইরে নগরে সাড়ে ১৫ কিমি দৈর্ঘ্যরে ১৩টি কাঁচা সড়ক আছে।