জেলার আড়াইহাজার এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বিকালেও এই সংঘর্ষের ঘটনায় দুপ্তারা ইউনিয়নের পাঁচগাও দেওয়ানপাড়া এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এর আগে সোমবার রাতে পাঁচগাও দেওয়ানপাড়া এলাকায় দুপ্তারা ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহন মিয়া ও একই ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুম্মন খানের অনুসারীদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, পাঁচগাও মোল্লাপাড়ায় ছাত্রদল নেতা মোহন মিয়া ও দেওয়ানপাড়া এলাকায় যুবদল নেতা জুম্মন খান নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। পাঁচগাও গোলাপবাগ বাজারটি বড় একটি ব্যবসা কেন্দ্র হওয়ায় বাজারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উভয় নেতার অনুসারীদের মধ্যে বিরোধ লেগেই থাকে। সোমবার রাতে মাদক ও জুয়ার আসর জমানোকে কেন্দ্র করে মোহন মিয়া ও জুম্মন খানের অনুসারীদের মধ্যে বাক্বিতণ্ডার একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে উভয়পক্ষের অনুসারীরা দেশি ধারালো অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে মোহন মিয়া (২০), তারা মিয়া (৫৫), খাইরুল ইসলাম (৩৫), জুম্মন খান (৩৫), মুন্না মিয়া (২৬), জামান মিয়া (৪০), ফালান মিয়া (৩৫), ইয়াকুব মিয়া (৩৭), ইয়াছিন ভূইয়া (৪০), আবুল কাসেম ভূইয়া (৪২), সোলেমান মিয়া (৩৮), পারভেজ মিয়াসহ (২৪) অন্তত ১৫ জন আহত হন। তাদের মধ্যে আবুল কাসেম, খাইরুল ইসলাম ও মোহন মিয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে দুপ্তারা ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহন মিয়া বলেন, দেওয়ানপাড়া এলাকার জুম্মন খানের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ গত বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগের লোকজনের সঙ্গে মিশে এলাকায় দাপটের সঙ্গে চলাফেরা করে।
শেখ হাসিনার পতনের পর তারা রাতারাতি ভোল পাল্টে যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বনে গিয়ে এলাকায় তাণ্ডব শুরু করে। স্থানীয়রা সেনাক্যাম্পে জুম্মন খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে গত ২০ অক্টোবর সেনাবাহিনী তাকে আটক করে। সেখান থেকে এসে সে তার লোকজনকে নিয়ে এলাকায় মাদক কারবারের বিস্তার করতে থাকে। সঙ্গে টাকার বিনিময়ে জুয়ার আসর জমায়। এতে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে আমি এর প্রতিবাদ করলে জুম্মন খানের নেতৃত্বে ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমাদের লোকজন মারাত্মক জখম হয়।
এদিকে জুম্মন খান মাদক, চাঁদাবাজি ও জুয়ার আসর বসানোর জন্য মোহন মিয়ার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, আমি ও আমার অনুসারীরা এসব অপকর্ম বাধা দিলে মোহন মিয়ার নেতৃত্বে তার লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র, ককটেল, ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে রক্তাক্ত জখম করে।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়। এ ঘটনায় এখনো কোনো পক্ষ মামলা করেনি।