চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে চালু হওয়া জনপ্রিয় ‘স্মার্ট স্কুল বাস সেবা’ বন্ধ হচ্ছে না। আর্থিক সংকটের কারণে বিপুল ব্যয় নির্বাহ কঠিন হয়ে পড়লেও জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের উদ্যোগে সেবাটি অব্যাহত থাকছে। ইতিমধ্যে নতুন স্পন্সর প্রতিষ্ঠান খুঁজে বের করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং আগামী মাসেই চূড়ান্ত আলোচনার আশা করছে জেলা প্রশাসন।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, “পরিচালন ব্যয় মেটাতে আমরা নতুন স্পন্সর প্রতিষ্ঠান খুঁজছি। আশা করছি, খুব শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে। স্পন্সর না পাওয়া পর্যন্ত আপদকালীন কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম ইতিমধ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। আগামী মাসের মধ্যেই স্পন্সর চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।”
জানা গেছে, ২০২০ সালে চট্টগ্রাম নগরীর স্কুল শিক্ষার্থীদের নিরাপদ যাতায়াতের জন্য ১০টি দোতলা বিআরটিসি বাস উপহার দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে এ বাসগুলো পরিচালনা করে বিআরটিসি। বাস চালকদের বেতন, জ্বালানি ও মেইনটেন্যান্স ব্যয়ের জন্য স্পন্সর প্রতিষ্ঠান হিসেবে দায়িত্ব নেয় জিপিএইচ ইস্পাত। সর্বশেষ ২০২৪ সালে প্রতিষ্ঠানটি আরও দুই বছরের জন্য স্পন্সরশিপ নবায়ন করে। এ সময় তারা ১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও ৭২ লাখ টাকা পরিশোধের পর সম্প্রতি জানায়—অর্থনৈতিক সংকটের কারণে বাকি অর্থ দেওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
ফলে হঠাৎই স্মার্ট স্কুল বাস সেবার পরিচালনা ব্যয় সংকটে পড়ে যায়। এতে বাস সার্ভিস বন্ধ হয়ে যেতে পারে এমন গুঞ্জন উঠলেও জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের উদ্যোগে তা আপাতত বন্ধ হচ্ছে না। এরই মধ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে নতুন স্পন্সর হওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
বহদ্দারহাট এলাকার অভিভাবক জমির হোসেন বলেন, “বাস চালু হওয়ার পর জিপিএস ও সিসিটিভি থাকার কারণে আমি নিশ্চিন্তে আমার সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে পারছি। যদি এই সেবা বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে হাজারো অভিভাবক বিপাকে পড়বেন।”
সংশ্লিষ্টরা জানান, আপদকালীন সময়ে পরিচালনা ব্যয় নির্বাহ করতে ভাড়া হিসেবে তিন মাসের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাথাপিছু ১ হাজার টাকা নেওয়া হবে। সরকারি স্কুলে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে এবং বেসরকারি স্কুলে মাসিক বেতনের সঙ্গে এই টাকা আদায় করবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। পরে তা জেলা প্রশাসনের কাছে জমা দেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/আশিক