বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিনের অপসারণের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা।
সোমবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় আমরণ অনশন শুরু করে তারা। এর আগে একই স্থানে রাত পৌনে ৯টায় সংবাদ সম্মেলন করে অনশনে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
এছাড়াও দুপুরে অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে মঙ্গলবার দুইটার পর থেকে দক্ষিণাঞ্চল অচল করার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।
এদিকে, ফেসবুকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রুপ লিংকার্স ইন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে লাইভে এসে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিন।
উপাচার্যের ফেসবুক লাইভে আসার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করে পৌনে ৯ টায় করা শিক্ষার্থীদের জরুরি সংবাদ সম্মেলনে মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সুজয় বিশ্বাস শুভ বলেন, উপাচার্যকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারছেন না। গত ২৮ দিন ধরে চলমান আন্দোলনের কোন পর্যায়েই তিনি শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ করেননি। অথচ শেষ মুহূর্তে এসে ফেসবুক লাইভে আসছেন। আমাদের স্পষ্ট কথা তার মতন ফ্যাসিস্ট উপাচার্য আমরা চাই না।
শিক্ষার্থী মোশারফ হোসেন বলেন, উপাচার্যের লাইভে আসা নিয়ে কারো কোন আগ্রহ নেই। উপাচার্য আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে লাইভে এসে সহানুভূতি নেয়ার চেষ্টা করছেন। আমরা তার ফাঁদে পা দেব না। তাই তার অপসারণ দাবিতে রাত সাড়ে ১১ টা থেকে অনশন কর্মসূচি শুরু করবো।
উপাচার্যকে লাইভে প্রশ্ন করা হয় শিক্ষার্থীরা আপনাকে চায় না। তারপরেও আপনি থাকতে চান। এর মাধ্যমে ভালো কিছু আসা করা যায় কিনা? জবাবে উপাচার্য বলেন, কোনটা সত্য আর কোনটা প্রভাবিত, সেটা যদি সকলের মধ্যে উপলব্ধি হয় তাহলে সব কিছু সমাধান হয়ে যাবে।
চুক্তিভিত্তিক দুইজনকে নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, আমার বিশ্বাসী কোন লোক ছিলো না। তাই দুই জনকে এক বছরের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো। এরমধ্যে একজন রিজাইন করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩তম ব্যাচের ওরিয়েন্টশন এখনো না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে বলেন, গত সপ্তাহে করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সিন্ডিকেট সভাসহ বর্তমান পরিস্থিতির কারণে হয়ে উঠেনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার বিষয়ে উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের মধ্যে দুইটি করে গ্রুপ রয়েছে। কোন কাজে কাউকে পাওয়া গেলে অন্যরা বিরোধীতা করেন।
লিংকার্স গ্রুপের শিক্ষকদের মধ্যে ৫০ ভাগ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৯৬ ভাগ তাকে চায় না জানালে উপাচার্য বলেন, এটা কতটুকু সঠিক। এ ভোট কি গ্রহণযোগ্য। শিক্ষার্থীদের নামে অন্য কেউ ভোট দিয়েছে। কারো তো নাম প্রকাশ হয়নি।
ভিসি বলেন, অনেক শিক্ষার্থী তাকে ক্ষুদে বার্তা দিয়ে পরীক্ষা ও ক্লাস চালু করার দাবি জানিয়েছে।
উপ-উপাচার্যকে কোনো দায়িত্ব না দেয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় আইনে তার কোন ভূমিকা নেই। সিন্ডিকেট সভা করে তাকে দায়িত্ব দেয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সিদ্বান্ত নেয়া হবে। তার যে দায়িত্বগুলো রয়েছে সময় হলে দেয়া হবে।
আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে তার কি বার্তা জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, আন্দোলন থেকে ক্লাসে ফিরে যান। আলোচনার দরজা খোলা রয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা যাবে। সকলের জন্য শুভ কামনা জানিয়ে বলেন সকলের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন