যেহেতু স্ক্যাল্প সেরাম চুলের গোড়া থেকে কাজ করে, তাই এটি চুলের সমস্যা ধারেকাছে আসতে দেয় না। শুধু তাই নয়, এতে থাকা প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো ত্বকের নানান সমস্যা যেমন- রুক্ষতা , তৈলাক্ত ভাব, খুশকি, লিম্প হেয়ার- এসব হ্রাস করে এবং ভিতর থেকে চুলকে আরও বেশি মজবুত এবং শক্তিশালী করে তোলে...
ত্বকের যত্নের জন্য যতটা খেয়াল রাখা প্রয়োজন, স্ক্যাল্পের ক্ষেত্রেও ঠিক ততটাই। বাইরের দূষণ, ব্যাকটেরিয়া, হরমোনের অস্বাভাবিকতা আর শুষ্কতা- এগুলো সব স্ক্যাল্পে নানান সমস্যা তৈরি করতে পারে। আজকাল ডার্মাটোলজিস্টরা স্ক্যাল্প কেয়ার নিয়ে বেশ কথা বলছেন। বাতলে দিচ্ছেন বেশ কিছু পদ্ধতি। যা মেনে চললে হেয়ার স্ক্যাল্প ভালো থাকবে। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম সেরাম ব্যবহার। এটি এমন প্রোডাক্ট, যা বিশেষভাবে স্ক্যাল্পের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সাহায্য করে; পাশাপাশি স্ক্যাল্পের সমস্যা থেকেও মুক্তি দেয়।
স্ক্যাল্পের সেরাম কী?
স্ক্যাল্প সেরাম এক ধরনের তরল বা লিকুইড, যা ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং নানান প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি। এটি স্ক্যাল্পের গভীরে প্রবেশ করে নানা সমস্যার সমাধান এবং হেয়ার গ্রোথে সাহায্য করে। কিন্তু অনেক সময় স্ক্যাল্প সেরাম আর হেয়ার সেরামকে গুলিয়ে ফেলা হয়। এ দুটির মধ্যে কিছু পার্থক্য অবশ্যই আছে। সাধারণত চুলে ব্যবহৃত সেরামের চেয়ে এটি আলাদা। কারণ, এটি শুধু চুলের গোড়ায় নজর না দিয়ে স্ক্যাল্পের ত্বকের জন্য কাজ করে। হেয়ার সেরাম মূলত চুলের তন্তুর জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি চুলে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি, ফ্রিজি হেয়ার কেয়ার এবং চুলের ফেটে যাওয়া প্রতিরোধে কার্যকর। হেয়ার সেরাম সাধারণত চুলের মাঝের অংশ থেকে নিচ পর্যন্ত মাখানো হয়। অন্যদিকে স্ক্যাল্প সেরাম চুলের তন্তুর পরিবর্তে স্ক্যাল্পের শুষ্কতা, চুল পড়া, খুশকির সমস্যা ইত্যাদি কমাতে সাহায্য করে। স্ক্যাল্প সেরামের মূল লক্ষ্য স্ক্যাল্পকে হাইড্রেটেড রাখা এবং চুলের ফলিকলগুলোর বৃদ্ধিতে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা। তাই হেয়ার সেরামের মতো স্ক্যাল্প সেরামের ব্যবহারও গুরুত্বপূর্ণ।
♦ শুষ্ক স্ক্যাল্পের কারণে চুল পড়া, খুশকি, রুক্ষ চুল এবং স্ক্যাল্পে অস্বস্তি হতে পারে। তবে স্ক্যাল্প সেরাম এসব সমস্যা দূরীকরণে কার্যকর। এটি এমন সব হাইড্রেটিং উপাদান দিয়ে তৈরি, যা স্ক্যাল্পকে নরম ও ময়েশ্চারাইজ রাখে। স্ক্যাল্পের কোষগুলোকে পুনরুজ্জীবিত এবং চুলের স্বাস্থ্যও উন্নত করে।
♦ স্ক্যাল্প সেরাম মাথার ত্বকে ঠিক ততটুকু তেল উৎপাদন করে, যতটা চুলের জন্য প্রয়োজন। যদি স্ক্যাল্পে প্রাকৃতিক তেলের উৎপাদন অতিরিক্ত হয়ে যায়, তাহলে জমে গিয়ে অস্বস্তি তৈরি হয়, যা চুল পড়ার অন্যতম কারণ। তবে সঠিক স্ক্যাল্প সেরাম ব্যবহার করলে তেলের ভারসাম্য বজায় রাখা যায়।
♦ বিশেষ কিছু স্ক্যাল্প সেরাম খুশকি দূরীকরণে ভীষণ কার্যকরী। এতে থাকা উপাদান; যেমন- টি ট্রি অয়েল আর অ্যাপেল সিডার ভিনেগার স্ক্যাল্পের পিএইচ ব্যালান্স ঠিক রাখা এবং খুশকি কমাতে সাহায্য করে। খুশকি শুধু অস্বস্তির কারণই নয়; চুলের বৃদ্ধিতেও বাধা সৃষ্টি করে। নিয়মিত স্ক্যাল্প সেরাম ব্যবহারে খুশকি অনেকটা কমে যায়, স্ক্যাল্পও থাকে হাইড্রেটেড।
♦ স্ক্যাল্প সেরামে থাকা উপাদান; যেমন- বায়োটিন ও পেপটাইড চুলের ফলিকলগুলোর রক্তসঞ্চালন বাড়িয়ে দেয়, যা চুল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ঘন আর লম্বা চুল পেতে সঠিক পুষ্টি আর ভিটামিন প্রয়োজন। স্ক্যাল্প সেরাম ঠিক তেমন পুষ্টি সরবরাহ করে, যা চুলের সঠিক বৃদ্ধি এবং চুল পড়া কমাতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বাজারে নানান ধরনের স্ক্যাল্প সেরাম পাওয়া যায় এবং প্রতিটির কাজ আলাদা। যেমন-
♦ রিজুভিনেটিং : যা স্ক্যাল্পের সাধারণ স্বাস্থ্য ও শক্তি বাড়াতে সহায়তা করে।
♦ এক্সফোলিয়েটিং : যা স্ক্যাল্পে জমে থাকা মৃত কোষ ও ময়লা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
♦ অয়েল-রেগুলেটিং : স্ক্যাল্পে অতিরিক্ত তেল উৎপাদনের রাশ টেনে ধরে।
♦ ড্যানড্রাফ : খুশকি দূর করতে দারুণ উপকারী।
♦ হাইড্রেটিং : শুষ্ক স্ক্যাল্পের জন্য আদর্শ।
♦ হেয়ার গ্রোথ : চুলের বৃদ্ধি উদ্দীপিত করতে সহায়ক।